করোনা কেড়ে নিল আরও ১২ প্রাণ, শনাক্ত ৫২৫
করোনায় মৃত একজনের দাফন/ ফাইল ছবি
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট হাজার ১৪৯ জনে।
এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৫২৫ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩৬ হাজার ১০৭ জনে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নতুন করে ভাইরাসটি থেকে মুক্ত হয়েছেন ৫১২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৮০ হাজার ৭২৮ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৬৩৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৪৫২টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪৯টি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৯টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় করা হয়েছে আট লাখ সাত হাজার ৮৭০টি।
বিজ্ঞাপন
মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১১ জন এবং এক জন নারী। সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ছয় হাজার ১৭৭ জন বাকি এক হাজার ৯৭৭ জন নারী।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ছয় জন, রাজশাহীতে দুই, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও সিলেটে এক জন করে চার জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি সাত জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের তিন এবং ৪১ থেকে ৫০ ও ৩১ থেকে ৪০ বছরের এক জন করে রয়েছেন।
১০ ফেব্রুয়ারির আগে স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মস্থল ত্যাগ নয়
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিকিৎসক-নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সকালে জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং মেডিকেল কলেজের পরিচালকদের সঙ্গে অনলাইন সভা শেষে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিকিৎসক-নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে যে কেউ ছুটি নিতে পারবেন।
টিকায় ১-২ শতাংশের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা প্রয়োগের পর গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না গেলেও এক থেকে দুই শতাংশ টিকা গ্রহীতার মধ্যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সকালে জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং মেডিকেল কলেজের পরিচালকদের সঙ্গে অনলাইন সভা শেষে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে টিকা নেওয়া ৫ জনের মধ্যে আমিও একজন। আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ আছি।
টিকা কার্যক্রম
গত বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে অনলাইনে যুক্ত হয়ে দেশে টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথম দিনেই ২৭ জনের দেহে প্রয়োগ করা হয় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এ টিকা। ওইদিন দেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বেক্সিমকোর আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা নিয়েছেন সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। তিনি কুর্মিটোলা হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ।
টিকা নেওয়া পরের চার জন হলেন- ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ্যের অতিরিক্ত ডিজি নাসিমা সুলতানা, পুলিশ সদস্য দিদারুল ইসলাম এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে মন্ত্রী, আমলা, চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৫ শতাধিক ব্যক্তি টিকা নিয়েছেন।
জানা গেছে, রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালে দ্বিতীয় দিনে মোট ৫৪১ জনকে টিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২০ জনকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮ জনকে, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১০০ জনকে, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৫৮ জনকে এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৫ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যেই ৬১ জেলার ৪৮৩ উপজেলায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) স্টোরে টিকা পৌঁছে দিয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা। ঢাকাসহ বাকি তিন জেলায় দেওয়া হবে ভারত সরকারের দেয়া উপহারের ২০ লাখ ডোজ টিকা।
এফআর