রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, কবে থেকে ট্রেনে ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন শুরু করা হবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) রেলভবনে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের পাশে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অংশীদারত্বের ভিত্তিতে শপিং মলসহ হোটেল-কাম-গেস্ট হাউজ নির্মাণের লক্ষ্যে চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমনটিই জানান রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

অনুষ্ঠানে রেলওয়ের পক্ষে আহসান জাবের এবং এপিক প্রপার্টিজ লিমিটেডের পরিচালক আনোয়ার হোসেন ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তিসাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা আফরোজ প্রমুখ।

রেলমন্ত্রী বলেন, রোববার সরকারের প্রজ্ঞাপনে আগামী ১৩ তারিখ থেকে অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার বিষয়টি কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করি। সে হিসেবে ১৩ জানুয়ারির অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। তাই ওই দিন থেকে ৫০ শতাংশ যাত্রী বহন করা সম্ভব হবে না। কবে থেকে ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন শুরু করা হবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে শিগগিরই জানিয়ে দেব।

মন্ত্রী বলেন, এর আগেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে রেল চলাচল করেছে এবং তা সফলতার সঙ্গে করেছে। নিজ নিজ সংস্থা সবকিছু ম্যানেজ করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে। কারণ ট্রেনের কত দিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে, এসব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন আরও বলেন, সরকারের বর্তমান নীতি অনুযায়ী উন্নয়ন কার্যক্রমের ৩০ শতাংশ পিপিপি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আমাদের ১২টি প্রকল্পের মধ্যে ইতোমধ্যেই দুটির চুক্তিস্বাক্ষর করা হলো।

রেলওয়ের বর্তমান উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে রেলপথমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী রেল খাতের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি আলাদা মন্ত্রণালয় করে দিয়েছেন। বর্তমানে রেলওয়ের উন্নয়নে বহুমুখী কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

মিটারগেজ ও ব্রডগেজ লাইনকে একমুখী ব্যবস্থা করে সারা দেশকে ব্রডগেজে রূপান্তর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে সিঙ্গেল লাইনকে ডাবল লাইনে রূপান্তর করা হবে। বর্তমানে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, যমুনা নদীর ওপর দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন পর্যায়ক্রমে ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হবে।

রেলমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের স্বার্থে রেলওয়ের উন্নয়ন প্রয়োজন। যে দেশ যত উন্নত, তার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা তত উন্নত। উন্নত দেশের স্টেশনগুলোর পাশে শপিংমল করা হয়। আমাদের দেশের রেল ব্যবস্থাকেও একইভাবে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের অনেক জমি আছে স্টেশনগুলোর পাশে। শপিং মল করে সেখান থেকে অর্জিত আয় দিয়ে আমরা একসময় রেলওয়েকে স্বয়ংসম্পূর্ণ অবস্থা ও লাভজনক করতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন রোড সংলগ্ন জায়গায় ডিজাইন বিল্ড ফাইন্যান্স অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার পদ্ধতিতে প্রায় ১৫তলা বিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হলো। এখানে হোটেল, শপিং মল, অফিস, সিনেপ্লেক্স, কনভেনশন সেন্টার, পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র এবং অ্যাপার্টমেন্ট থাকবে। এর সম্ভাব্য ব্যয় ৪৫ কোটি টাকা। নির্মাণকাল সহ ৪০ বছর পরে স্থাপনাটি রেলওয়ের শতভাগ মালিকানায় পরিচালিত হবে। প্রকল্পের সব ব্যয় বেসরকারি অংশীদার বহন করবে।

পিএসডি/এএজে/এসএম