আর্টিকেল নাইনটিনের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও ধর্মীয় গোঁড়ামি প্রতিরোধে আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় নেতাদের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) আর্টিকেল নাইনটিনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন তিনি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, বহুত্ববাদ, অন্তর্ভুক্তিমূলকতা ও সহনশীলতা প্রচারের উদ্দেশ্যে আর্টিকেল নাইনটিন মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে কমিউনিটি রেডিও নাফ ৯৯.২ এফএমে একটি সরাসরি আলোচনা অনুষ্ঠান করেছে। 

এতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের, বিশেষ করে তরুণদের করণীয়, অনলাইনে গুজব, অপতথ্য, ভ্রান্ততথ্য, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উস্কে দেওয়ার ঘটনা বিশ্লেষণ এবং গুজব বা অপতথ্যের ছড়িয়ে পড়া রোধে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ও স্থানীয় দায়িত্বশীল গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়। 

আলোচক হিসেবে রেডিও নাফের স্টুডিওতে উপস্থিত ছিলেন আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) সহকারী পরিচালক তামান্না মুস্তারী, টেকনাফ সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সন্তোষ কুমার শীল ও টেকনাফ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরী।

ফারুখ ফয়সল বলেন, কেবল ফায়দা লোটার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মকে নিয়ে করা রাজনীতি প্রতিহত করতে হবে। সকল ধর্ম সম্পর্কে জানার মধ্য দিয়ে ধর্মীয় সাম্য ও মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে তোলা যায়। এজন্য তরুণদের আগ্রহী করে তুলতে হবে।

মাউশির সহকারী পরিচালক তামান্না মুস্তারী বলেন, মনোযোগ পাওয়ার জন্য আজকাল তরুণদের মধ্যে ‘ভাইরাল’ হওয়ার প্রবণতা কাজ করে। এদের অনেকেই না বুঝে অনলাইনে গুজব ও ফেক নিউজ ছড়ায়। যেহেতু অনলাইন ব্যবহারকারীদের বেশির ভাগই তরুণ, তাই ডিজিটাল লিটারেসি ও মিডিয়া ইনফরমেশন লিটারেসি সম্পর্কে তাদেরকে বেশি করে জানাতে হবে।

টেকনাফ সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সন্তোষ কুমার শীল বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলা উস্কে দিতে গুজব সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে। অনেক সময় ধর্মীয় উৎসবে অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়, যার সঙ্গে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের কোনো সম্পর্ক থাকে না। উৎসবে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল আচরণের ব্যাপারেও আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

টেকনাফ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে কোনো ঘটনায় সঠিক তথ্যের ঘাটতি থাকেই গুজব ও ফেক নিউজ দ্রুত ছড়ায়। ফেসবুকে গুজব ছড়িয়েই ২০১২ সালে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে অগ্নিসংযোগ ও হামলা করা হয়েছিল। তাই সংবেদনশীল যেকোনো ঘটনার ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দ্রুত প্রচারে সরকার ও গণমাধ্যমকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

এসআর/ওএফ