প্রকল্পনির্ভর কার্যক্রম পরিকল্পিত নগরী গড়তে বাধা
পিপিপি প্রকল্পসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রকল্পনির্ভর কার্যক্রম পরিকল্পিত নগরী গড়ায় বাধা সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) দক্ষিণ সিটির জিরানী খালের বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আমরা অপরিকল্পিত এই শহরকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি, পরিকল্পিত রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু অযাচিতভাবে, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বিভিন্ন সংস্থা এখনো আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। বিআইডব্লিটিএ কিংবা যেকোনো পিপিপি প্রকল্পের নামে ঢাকার শহরে বিভিন্ন সংস্থা প্রকল্পনির্ভর কাজ করে আমাদের এই অগ্রযাত্রা ব্যাহত করছে।
গত বছর ঢাকাবাসী খাল থেকে বর্জ্য ও পলি অপসারণ কার্যক্রমের সুফল পেয়েছে উল্লেখ করে শেখ তাপস বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে গত বছর থেকে আমরা খালগুলোর বর্জ্য ও পলি অপসারণ কার্যক্রম শুরু করেছি। এ বছরও যথারীতি আমরা সময়মত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে এ বছরও জিরানী খালের বর্জ্য ও পলি অপসারণ কার্যক্রম শুরু করেছি। সেটাই আমি আজ পরিদর্শনে এসেছি। গত বছর এই কার্যক্রমের সুফল ঢাকাবাসী পেয়েছে। গত চার মাস বিভিন্ন সময় বৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও শুধু প্রথম দিকে কিছু জলাবদ্ধতা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা ১ ঘণ্টার মধ্যেই সেই জলাবদ্ধতা নিরসন করতে সক্ষম হয়েছি।
বিজ্ঞাপন
গত বছর কোথায় কোথায় জলাবদ্ধতা হয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে অবকাঠামো উন্নয়নে কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে পোস্তগোলায় আমরা ৬ ফুট ব্যাসার্ধের পাইপ বসিয়েছি। সেটা হয়ে গেলে পোস্তগোলা, জুরাইন কবরস্থান পর্যন্ত পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে এসব অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে ঢাকাবাসী এর সুফল পাওয়া শুরু করেছে। তবে খাল নিয়ে আমরা যে প্রকল্পটা নিয়েছিলাম, সেটা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা আবারও মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য আমরা কাজ করছি।
দখলমুক্ত করা খাল আবারও দখল হচ্ছে জানিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আজ আমরা এসে দেখলাম আবারও খাল দখল হচ্ছে। এই দখল, আগ্রাসন থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমি অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখলাম পানির উপরেই আবার দোকান করা হয়েছে। এগুলো আমরা আবারও অপসারণ করব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার প্রথম দিন থেকেই আমরা যেভাবে খালগুলো দখলমুক্ত এবং সেগুলো থেকে বর্জ্য অপসারণ করেছি সেভাবে স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা একটি প্রকল্পও হাতে নিয়েছি। কিন্তু সেই প্রকল্প পাস না হওয়া পর্যন্ত, প্রকল্পের কাজ শুরু না করা পর্যন্ত আমরা কিন্তু স্থায়ী সমাধানে যেতে পারছি না। আমাদের কিন্তু প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। এ বছর আমরা যে আবারও পরিষ্কার করব, এটা কিন্তু আমাদের জন্য বাড়তি ব্যয়। এজন্যই এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা স্থায়ী ব্যবস্থা করতে চাই। আমরা আশাবাদী, সরকার এ প্রকল্পটি দ্রুত পাস করে দেবে। তাহলে আর এ অযাচিত দখল করতে পারবে না। না হলে প্রত্যেক বছরই আমাদেরকে এটা বার বার করতে হবে এবং এই দখলের আগ্রাসনও অব্যাহত থাকবে।
এর আগে মেয়র পোস্তগোলা এলাকায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস) উদ্বোধন, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান কার্যক্রম এবং বাসাবো বালুরমাঠ পুকুরে হাঁস অবমুক্ত করেন।
এ সময় করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. ফজলে শামসুল কবির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এএসএস/আইএসএইচ/জেএস