আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তারা সবাই দক্ষ ও দেশপ্রেমিক বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, হঠাৎ করে কেন এই নিষেধাজ্ঞা তার বোধগম্য নয়। আমি বিশ্বাস করি আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দেশ ও দেশের মানুষের নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করে। তবে আমি বলব না সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ধোয়া তুলসি পাতা। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদের আমরা অত্যন্ত দক্ষ ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা হিসেবে জানি।

এ সময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জের ধরে অচিরেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার এসব দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই সংসদ সদস্য।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কেন এই নিষেধাজ্ঞা দিল তা নিয়ে সরকার কাজ করছে। আমরা বিশ্বাস করি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে তারই পরিপ্রেক্ষিতে অচিরেই যুক্তরাষ্ট্র আমাদের যেসব দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা প্রত্যাহার করে নেবে।

এই নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে কিছু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বাবলা।

একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওই নিষেধাজ্ঞার পর দেশে নানা গুজবের ডাল-পালা ছড়ানো হচ্ছে। প্রতিদিনই নানা খবর আসছে। শোনা যাচ্ছে অমুকের ভিসা বাতিল হয়েছে, তমুক ঢুকতে পারেননি। একই সঙ্গে নানা আলোচনা এখানে সেখানে- এই নিষেধাজ্ঞায় সরকার কী চাপে পড়েছে? সামনের দিনগুলোতে সরকার কি আরও বড় কূটনৈতিক চাপে পড়তে যাচ্ছে?

বাবলা বলেন, আমরা দেখেছি বিদেশে অবস্থানরত কয়েকজন ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের গুজব রটাচ্ছেন। আর আমাদের দেশের কিছু মানুষ সে গুজবের ডাল-পালা ছড়িয়ে দিচ্ছে সমাজের সর্বস্তরে। একের পর এক গুজব রটছে সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তবে ব্যক্তির ভিসা বাতিল সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাস কোনো তথ্য প্রকাশ করে না। ফলে এই ধরনের গুজবের সত্যতা যাচাইয়ের কোনো সুযোগ থাকে না।

রাজনীতিবিদর প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাপার এই সংসদ সদস্য বলেন, দেশের কতিপয় দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের নেতারা এসব বিষয় নিয়ে নেতিবাচক কথা বলছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ভিন্ন ভিন্ন দশ ও মতের হতে পারি। তবে রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে আরও দায়িত্বশীল ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনৈতিক নেতাদের বলব, আপনারা এমন বক্তব্য দেবেন না যেটা বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।

তিনি বলেন, ভারতে শত মতের মানুষ বসবাস করে। তারা একে অপরের প্রতি অত্যন্ত তীব্র ভাষায় কথা বলেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থের বিষয় এলে সবাই এক হয়ে যায়। তেমনি আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আমাদের জাতীয় ইস্যু। তাই সমালোচনা বাদ দিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এটা মোকাবিলা করতে হবে। এই ইস্যুর সঙ্গে বিশ্ব দরবারে আমাদের ভাবমূর্তি জড়িত।

এইউএ/এমএইচএস