ছবি : সংগৃহীত

ইতিহাসের প্রকৃত সত্য এই যে, ইতিহাস-বিকৃতি বিএনপির আজন্ম স্বভাব। ১৯৭৫ সালের পর থেকে জিয়ার শাসনামল এবং পরবর্তী সময়ে বিএনপির শাসনামলে তারা ৭ নভেম্বরকে ‘বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস পালনের মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন ইতিহাসের চরম বিকৃতি ঘটায় অপরদিকে তেমনি জাতির সাথে এক করুণ তামাশার নাটক মঞ্চস্থ করে চলে।

দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হলে জাতির সাথে শাসকদের রাষ্ট্রীয় তামাশার সমাপ্তি ঘটে। শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাসের প্রকৃত পুনর্জন্ম ঘটতে থাকে। এদেশের মানুষ উপলব্ধি করতে থাকে স্বৈরশাসকেরা জাতিকে কী গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত করে রেখেছিল!

প্রকৃতপক্ষে ৭ নভেম্বর কোনো ধরনের বিপ্লবই সংঘটিত হয়নি উপরন্তু জনতার সংহতির কোনো প্রশ্নই ছিল না। প্রকৃতপক্ষে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো দিন।

১৯৭৫ সালের এইদিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল হুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল হায়দারসহ বহু সৈনিক এবং সেনা কর্মকর্তাকে সেদিন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীর অসংখ্য কর্মকর্তার লাশের ওপর দাঁড়িয়ে ৭ নভেম্বর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন জিয়াউর রহমান।

জিয়ার নির্দেশে সামরিক আদালতে বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারা হয় সেনা বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের অসংখ্য কর্মকর্তা। জিয়ার অসংখ্য হত্যা, গুম ও খুনের রাজনীতির মধ্য দিয়ে পরবর্তীকালে বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটির জন্ম হয় সেনা ছাউনির ভেতরে বন্দুকের নলই ছিল যাদের ক্ষমতার উৎস। এরাই আজ গণতন্ত্রের নামে জিকির তুলছে, এর চেয়ে ঐতিহাসিক ট্রাজেডি আর কী হতে পারে!

আরও পড়ুন : কার বিপ্লব, কে উদযাপন করে! 

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল রক্তপিপাসু, নরপিশাচ এবং ক্ষমতালোভী বিপথগামী মাঝারি পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের পশ্চাতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা বর্ণচোরা কিছু নেতাকর্মীর ইন্ধনও ছিল।

সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে পৃথিবীর ইতিহাসে এরা জঘন্যতম ঘটনার ‘নায়ক’-এ পরিণত হয় কিন্তু ইতিহাসেরই সত্য আলোর সূর্যরশ্মি এই সব নায়কদের অল্পদিনের মধ্যেই ‘খলনায়ক’ও বানিয়ে ছাড়ে!

গল্প প্রচলিত আছে যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগের দিন খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য নিজের বাড়ি থেকে রান্না করা হাঁসের মাংস নিয়ে শুভেচ্ছা সফরে এসেছিলেন! রাজনৈতিক সুসম্পর্কের (!) বাইরে পারিবারিকভাবেও জাতির পিতা তাকে এতটাই ঘনিষ্ঠ মনে করতেন! আর সেই বর্ণচোরা খন্দকার মোশতাকই ঘাতকদের পশ্চাতের পরম আশ্রয় হিসেবে নেপথ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছেন!

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের ১৮ সদস্যের রক্তে রঞ্জিত মৃতদেহের ওপর দাঁড়িয়ে খন্দকার মোশতাক নিজেকে দেশের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে হত্যাকারীদের তিনি ‘দেশের সূর্য সন্তান’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন। কী পরিমাণ বিকৃতি একজন মানুষকে গ্রাস করলে তিনি এমন কথা বলতে পারেন তা নির্ণয় আমাদের পক্ষে কঠিন! মূলত বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের সমর্থন নিয়েই রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন খন্দকার মোশতাক।

মাত্র ৮৩ দিন দেশের রাষ্ট্রপতি থাকাকালে খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি, জয় বাংলা স্লোগানের পরিবর্তে পাকিস্তানি আদলে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগানের প্রবর্তনসহ বাংলাদেশ বেতারের নাম পরিবর্তন করে পাকিস্তানের মতো রেডিও বাংলাদেশ করেন।

আরও পড়ুন : রাজনৈতিক পাপের উৎস সন্ধানে 

ক্ষমতা হারানোর মাত্র ৩ দিন আগে জাতীয় চার নেতাকে কারাগারের অভ্যন্তরে হত্যা করেন। আবার রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতার সামনে থাকলেও মোশতাকের চেয়ে ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সেনা কর্মকর্তারাই ছিলেন মূলত প্রবল পরাক্রমশালী। এরূপ ষড়যন্ত্রকারী, লোভী, হত্যাকারী এবং হত্যাকাণ্ডে মদদদাতাদের নিন্দা জানানোর জন্য উপযুক্ত ভাষা খুঁজে পাওয়াও দুষ্কর!

স্বাধীনতা লাভের মাত্র চার বছরের মাথায় রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর রাষ্ট্র ক্ষমতার দখল নিয়ে ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মসের প্রথম সপ্তাহের সাত দিনের রক্তাক্ত ঘটনাপ্রবাহের এক সকরুণ পরিণতি ঘটেছিল ৭ তারিখে।

অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানে সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির আপাত সমাধান সম্ভব হয়েছিল সেই দিন। কিন্তু এই পরিণতির পশ্চাতেও ছিল রক্তাক্ত ও করুণ ইতিহাস। তাই ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটনাবহুল (!) দিন। এদেশের রাজনীতির ইতিহাসেও এই দিকে গুরুত্বের সাথে দেখতে হয়, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ, আলোচনা ও সমালোচনা করতে হয়।

৭ নভেম্বর একটি পক্ষ ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে। অন্য পক্ষ পালন করে ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লব দিবস’ হিসেবে। কিন্তু দুই পক্ষের বাইরে আরও একটি পক্ষ আছে। তারা দিনটি পালন করে ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস’ হিসেবে। বিভিন্ন পক্ষ ভিন্ন ভিন্নভাবে ৭ নভেম্বর স্মরণ করলেও বহুসংখ্যক পরিবার স্বজন হারানোর বেদনায় আপ্লুত হয়ে বেদনা-বিধুরতায় অশ্রু বিসর্জনের দিবস ছাড়া আর কী হিসেবে পালন করবে আমরা জানি না!

যারা নির্বিচারে স্বামী, সন্তান, পিতা ও ভাইকে হারিয়েছেন তাদের চোখের জল আর হৃদয়ের ক্ষত ছাড়া আর কিছুই নেই! একে তো নির্বিচারে কিংবা সামরিক বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে হত্যা তারপর আবার হত্যাকাণ্ডের পর অনেকের লাশও ফেরত দেওয়া হয়নি নিকট আত্মীয়দের কাছে!

আরও পড়ুন : ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত : ভাষা আন্দোলন ও বাংলাদেশের ইতিহাস 

প্রিয়জনের মৃতদেহ এক নজর দেখার সুযোগ থেকেও তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে। জীবন বাজি রেখে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পাকস্তানি বাহিনীর মারণাস্ত্র উপেক্ষা করে বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরে মায়ের কোল ভরে তুললেও এদেশীয় ক্ষমতালোভী আততায়ীর কবল থেকে তারা মুক্তি পাননি! স্বাধীন স্বদেশে বুলেট এবং ফাঁসির দড়িই তাদের ভাগ্যে জুটেছিল!

অবশ্য আমাদের বলারই বা আর কী অবশিষ্ট থাকে, আমাদের আফসোসেরই বা আর কী অবশিষ্ট থাকে যে দেশের স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতাকেই ক্ষমতালোভীরা হত্যা করতে পারে সেই দেশের একজন সেনা কর্মকর্তা বা সাধারণ নাগরিকের প্রাণ তো ঘাতকদের কাছে অতিশয় তুচ্ছ মাত্র বৈ নয়!

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এই দেশের রাজনৈতিক চরম উত্থান-পতনের ঢেউয়ে আসে ৭ নভেম্বর। এই দিনকে বিএনপি ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস হিসেবে উদযাপন করে। কিন্তু আওয়ামী লীগসহ অপরাপর বেশকিছু রাজনৈতিক দল দিনকে ইতিহাসের আরেকটি ‘কালো দিন’ হিসেবে দেখে এবং মূল্যায়নও করে মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস হিসেবে।

প্রকৃতপক্ষে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনেককেই মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান হত্যা করেছিলেন। এদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল হুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল হায়দারসহ বলা যায় অগণিত সৈনিক ও অফিসারদের হত্যা করা হয়েছিল সেদিন।

এমনকি যে কর্নেল তাহের বন্দিদশা থেকে মেজর জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিলেন সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরকেও জিয়াউর রহমান সামরিক ট্রাইব্যুনালের নামে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতালিপ্সু সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে যে অস্থির ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তারই ধারাবাহিকতায় সৃষ্টি হয়েছিল ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানর নির্মম নাটকীয় ঘটনা!

৭ নভেম্বর সৃষ্টির পেছনে অনেকে জাসদের ভূমিকার কথাও বলেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সদ্য স্বাধীন দেশে জাসদের ভূমিকা ও আলোচনা পাশ কাটানো যায় না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রায় একযুগ এই দলটি রাজনৈতিক নানা ঘটনা পরম্পরার সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তাই ৭ নভেম্বর এলে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে জাসদ ও সেনা কর্মকর্তা হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম দুটি আলোচনার বিশেষ কেন্দ্রে থাকে।

আরও পড়ুন : জিয়া বীর উত্তম পদবির যোগ্য নয় 

বলা হয়ে থাকে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর অভ্যুত্থানের পরিকল্পনায় জাসদ সক্রিয় হলেও সেই অভ্যুত্থানের সমগ্র সাফল্য করায়ত্ত্ব করেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। দেশে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে গঠিত জাসদেরও লক্ষ্য ছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা। সেই লক্ষ্যেই ১৯৭৪ সালে তাদের ঘোষণায় যুক্ত হয়েছিল ‘আন্দোলন মানে সশস্ত্র সংগ্রাম আর সংগঠন মানে সেনাবাহিনী’।

এই স্লোগান ধারণ করেই গড়ে উঠেছিল জাসদের বিপ্লবী গণবাহিনী। ১৯৭৩ সাল থেকে সামরিক বাহিনীর মধ্যে সক্রিয় হতে থাকে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর এই দেশে সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক দৃশ্যপটের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্তদের সমর্থনে খন্দকার মোশতাকের সরকার গঠিত হওয়ার পর জাসদের কর্মকাণ্ড পরিবর্তিত হয়ে যায়—সমালোচকের মতে ‘জাসদ সাইড-লাইনে চলে যায়’। কিন্তু ৩ নভেম্বর মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানের পর জাসদ আবারো সক্রিয় এবং তৎপর হয়ে উঠেছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আরেকটি অভ্যুত্থান হয়েছিল ৭ নভেম্বর।

ঘটনাচক্রে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন। শুধু তাই নয় ক্ষমতা ভোগ-দখলেও কৃতিত্ব দেখান! ক্ষমতার দাপট এবং তার ব্যক্তিগত ঈর্ষার চোখে পড়া সৈনিক, সেনা কর্মকর্তাসহ কয়েকজন টেলিভিশন কর্মকর্তাকেও নির্বিচারে হত্যা করেন।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর এবং ৭ নভেম্বর একই সূত্রে গাঁথা বিষাদের আখ্যান। আমরা বিশ্লেষকের মতামত আরেকটু প্রলম্বিত করে বলতে চাই যে, ওপরের ওই ৩টি কালো দিবসের সাথে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টও অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দাবি রাখে। কেননা, সেদিন বঙ্গবন্ধুরই উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও হত্যার চেষ্টা করেছিল জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরিরা।

আরও পড়ুন : বিএনপির লবিং এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার প্রমাণ 

কয়েক বছর ধরে ৭ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের দাবিও শোনা করা যাচ্ছে। এদেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, বিচার হয়েছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের বিচার। এসব বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্ক মুক্ত হয়েছে।

আবার, ৩ নভেম্বর জেলহত্যার বিচার আংশিক সম্পন্ন হলেও এখনো অনেকের বিচার চলছে। আমরা প্রত্যাশা করব সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারিক প্রক্রিয়া আইনসম্মত পন্থায় দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন হোক। ন্যায়ভিত্তিক সমাজে যেকোনো হত্যাকাণ্ডেরই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া উচিত।

স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে ৭ নভেম্বরের সেনা ছাউনিসহ বেসামরিক অন্যান্য হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা এখন সময়ের অনিবার্য দাবিতে পরিণত হয়েছে।

বিএনপি যতই ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করুক না কেন আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে ৭ নভেম্বরের প্রকৃত ঘটনাবলি জাতির সম্মুখে উন্মোচন করা প্রয়োজন।

প্রকৃত সত্য উদঘাটনে তদন্ত কমিশন গঠনের বিকল্প নেই। যারা স্বজন হারানোর বেদনায় নিমজ্জিত তারা তাদের আপনজন কোনো দিন আর ফিরে পাবেন না। কিন্তু আজও তারা যে গ্লানি বহন করছেন তা থেকে তাদের মুক্ত করার দায় ইতিহাসেরই। আর ইতিহাস দায়মুক্ত না করা পর্যন্ত ৭ নভেম্বর কালো দিন হিসেবেই বিবেচিত হবে, কোনোক্রমেই তা বিপ্লব ও সংহতি দিবস হতে পারে না।

ড. আহমেদ আমিনুল ইসলাম ।। অধ্যাপক, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়