ছবি : সংগৃহীত

২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত চারটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়েছে এবং চারটি কমিশনই তার মেয়াদ শেষ করেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন খ্যাতিমান অধ্যাপক মিজানুর রহমান; তিনি ছয় বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। তৃতীয় কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন আগের কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য রিয়াজুল হক; তিনিও ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে কমিশনের কাজে নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন।

চতুর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান হিসেবে বিদায় নিলেন নাসিমা বেগম। পঞ্চম কমিশন গঠন হয়েছে। এই কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি চতুর্থ কমিশনে পূর্ণকালীন সদস্য ছিলেন।

কমিশন এক যুগ কাটিয়ে দিয়েছে এবং এই এক যুগে আমরা বারবার শুনেছি "কমিশনের আইনি সীমাবদ্ধতা আছে; আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত ক্ষমতা নেই।" প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রত্যেক কমিশন বলে আসছে, তাদের আইনে ক্ষমতা নেই এবং তাই মানবাধিকার লঙ্ঘনে তেমন ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রশ্ন হলো, প্রত্যেক কমিশনের চেয়ারম্যানের এই একই কথা মানুষ আর কত শুনবে? এটা কি তাদের আইনি কথা নাকি  দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার যুক্তি?

আরও পড়ুন : প্রতিবন্ধী মানেই প্রতিভাবন্ধী নয় 

পৃথিবীতে ১২০টি দেশে মানবাধিকার কমিশন, মানবাধিকার কমিটি, মানবাধিকার ন্যায়পাল আছে যাদের NHRI (National Human Rights Institutions) বলা হয়। এই ১২০টি দেশের NHRI এর ৯৯ শতাংশের নিজেদের সুপারিশ বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা নেই। ১২০টির মধ্যে ৮৮টি প্যারিস নীতিমালা অনুযায়ী A স্ট্যাটাস প্রাপ্ত।

বাংলাদেশের NHRC ২০১১ সাল থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত প্রতিবারই B স্ট্যাটাস পেয়েছে। কারণ (ক) কমিশন তার কার্যপদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী নয় (খ) মানবাধিকার সংক্রান্ত পার্লামেন্টারি কমিটি থাকা উচিত (গ) NHRC Act সংশোধন প্রয়োজন; (ঘ) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং পদ্ধতির সাথে সম্পর্ক বাড়াতে হবে (ICC সাব-কমিটি রিপোর্ট ২০১১, ২০১৫)।

উপরোক্ত কারণগুলোর মধ্যে এক নম্বর কারণ কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা। এই সক্ষমতার অভাব শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রতীয়মান। কেন কমিশনের এই অসক্ষমতা?

কমিশনের অসক্ষমতার কারণসমূহ—

প্ৰথম, অভিযোগ নিষ্পত্তিতে কমিশন আজ পর্যন্ত কোনো বিধিমালা তৈরি করেনি। এই অদক্ষতা কমিশনের অভিযোগ নিষ্পত্তি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী করে দেয়।

দ্বিতীয়, কমিশন যেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে তদন্ত করতে পারে, সেসব ক্ষেত্রে (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ব্যতীত অন্যান্য সরকরি কর্তৃপক্ষের মানবাধিকার লঙ্ঘন) আজ পর্যন্ত সফল কোনো তদন্ত করেছে বলে প্রমাণ নেই।

আরও পড়ুন : বিসিএস : মেধাবীরা কেন মাঠে? 

তৃতীয়, তদন্ত কীভাবে, কার দ্বারা, কোন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করবে তার পরিষ্কার ধারণাও কমিশনের জানা নেই।

চতুর্থ, কয়েকটা ক্ষেত্রে কমিশন তদন্ত করলেও দেখা গেছে কমিশন তদন্ত করেছে অপরাধের; মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো তদন্ত করেনি। আইন কমিশন অপরাধ তদন্ত করতে কোনো ক্ষমতা দেয়নি। সমস্যা হলো—অপরাধ আর মানবাধিকার লঙ্ঘন—এই দুয়ের  মাঝে পার্থক্য কী? এই জায়গায় কমিশন এখনো পর্যন্ত সক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছে বলে মনে হয় না।

পঞ্চম, কমিশন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার ক্ষেত্রে সরকারের কাছ থেকে কেবল প্রতিবেদন চাওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে। এখানে কমিশন পঙ্গু নয়। কারণ, সরকার যে প্রতিবেদন দিবে সেই প্রতিবেদন নিয়ে কমিশন সন্তুষ্ট থাকবে। সন্তুষ্ট না হলে কমিশনের ক্ষমতা অনেক বেশি। সন্তুষ্ট হওয়ার জন্য কমিশনের কি কার্যপদ্ধতি বা কৌশল থাকা উচিত তা কমিশন এখনো পর্যন্ত বুঝে উঠতে পারেনি। 

ষষ্ঠ, থানায় মামলা হলেই কমিশন বলে দেয়, কমিশনের কিছু করার নেই। এই ধরনের সিদ্ধান্ত কমিশনের জন্য আত্মঘাতী এবং আইনের ও মানবাধিকারের পরিপন্থী। কারণ, অপরাধ আর মানবাধিকার লঙ্ঘন এক নয়।

একটা অপরাধ চলাকালীন অবস্থায় ভিকটিম অথবা অভিযুক্তের একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতে পারে। অপরাধের বিচার চলাকালীন সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকার দেওয়া কেবল উচিত নয়; কমিশনের আইনি দায়িত্ব।

পুলিশ অপরাধের তদন্ত করতে গিয়ে গাফিলতি করলে সেটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন; অটপসি (Autopsy) রিপোর্ট করতে গিয়ে, সাক্ষ্য নিতে গিয়ে আইন লঙ্ঘন করলে সেটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন; ময়না তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে ডাক্তার এবং পুলিশ অবহেলা বা ইচ্ছাকৃত ভুল করলে সেটা মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন।

আরও পড়ুন : জঙ্গিবাদ যেভাবে দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দেয় 

সপ্তম, পুলিশ কাস্টডি কিংবা জুডিশিয়াল কাস্টডিতে কোনো মৃত্যু হলে কিংবা নির্যাতন হলে সেগুলো মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন। কিন্তু এইসব জায়গায় কমিশন কোনো নির্দেশনা বা বিধিমালা তৈরি করেনি। 

অষ্টম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার ক্ষেত্রে কমিশন সরকারের কাছ থেকে প্রতিবেদন চাইবে (১৮ ধারা)। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা এবং প্রতিবেদনের মধ্যে থেকেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের উপাদান খুঁজে বের করতে হয় এবং অন্যান্য দেশের কমিশন এটাই করে। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় কমিশন এখনো তেমন প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার বিরুদ্ধে কমিশনের তদন্ত ক্ষমতা ভারতেও কিন্তু নেই।

তারপরও ভারতীয় কমিশন কীভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় রুপি ক্ষতিপূরণের সুপারিশ করছে এবং আদায় করতে বাধ্য করছে? এটা সম্ভব আইনের ব্যাখ্যার মাধ্যমে। আইনের সেই ব্যাখ্যা কমিশন খুঁজে বের করে সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি, যদিও ভারতের কমিশনের কয়েকটা সিদ্ধান্ত দেখলেই তা বোঝা যায়।

নবম, কমিশনকে আইনে দেওয়ানি আদালতের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সেই ক্ষমতা কীভাবে প্রয়োগ করতে হয় তা এখনো কমিশন বুঝতে পেরেছে বলে মনে হয় না। বিধিমালার মাধমে কমিশন কীভাবে, কখন, কার সাক্ষ্য, উপস্থিতি বা ব্যাখ্যা বাধ্য করবে তা সুনির্দিষ্ট করা উচিত।

দশম, চলমান মামলার বিভিন্ন পর্যায়ে (চার্জ শুনানিতে, বিচারে সাক্ষ্য গ্রহণকালে, সাজা ঘোষণার সময়ে, আপিল করার ক্ষেত্রে, আপিল শুনানির সময়ে, আপিলের সাজার সময়ে) কমিশনের আইনগত দায়িত্ব আছে মানবাধিকার লঙ্ঘন যেসব জায়গায় ঘটতে পারে সেখানে আদালতে আবেদন দিয়ে ইন্টারভেনর (Intervenor) হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কমিশন কীভাবে এবং কী প্রক্রিয়ায় আদালতের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক সংযোগ রেখে মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে কাজ করবে তার দিকনির্দেশনা বের করতে পারেনি।

আরও পড়ুন : ধর্মের রাজনীতি নাকি রাজনীতির ধর্ম

একাদশ, কমিশনের মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সাথে চলমান মামলা ছাড়াও কীভাবে ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করা যায় এবং তার দেওয়া সুপারিশ যাতে সরকার পালন করতে বাধ্য হয় সেই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সাথে কর্মপদ্ধতি ঠিক  করা উচিত। 

দ্বাদশ, জীবনের অধিকার এবং আত্মমর্যাদার অধিকারের সাথে যখন সাংবিধানিক অধিকার সাংঘর্ষিক মনে হয়, সেক্ষেত্রে ভারতীয় মানবাধিকার কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে পারে অনায়াসে। অর্থাৎ হাইকোর্ট ডিভিশন একই বিষয়ে মামলা গ্রহণ করলে কমিশন ইন্টারভেনর হয়ে যাবে; একই বিষয়ে কমিশন অভিযোগ নেবে না।

ত্রয়োদশ, কমিশন যে প্রক্রিয়ায় বা যেভাবে তদন্ত বা স্পট-ভিজিট বা ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিংস করে তা প্রায়ই প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ কমিশন যাদের দিয়ে কাজগুলো করায় তাদের যথাযথ অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা বা ট্রেনিং আছে কি না সেটা কমিশন এখনো নির্ধারণ করেনি।

যে প্রক্রিয়ায় তদন্ত করে সেই প্রক্রিয়া প্রাতিষ্ঠানিক হতে হবে। এই বিষয়ে ভারতীয় মানবাধিকার কমিশন সরকারের কাছ থেকে পুলিশের আলাদা একটা তদন্তকারী টিম নিয়ে কাজ করে।

সাম্প্রতিক দুটি মামলায় কমিশনের যুগান্তকারী সুপারিশ—

২০২০ এবং ২০২২ সালে খাদিজা নির্যাতন এবং আট ব্যক্তির নামের ভুলে অবৈধ কারাবাসের ক্ষেত্রে কমিশন মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সরকারের নিকট বড় অঙ্কের সুপারিশ করে। ২০১৮ সালে সিসিবি ফাউন্ডেশন হাইকোর্টে মানবাধিকার কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট দায়ের করে।

ওই রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট কমিশনকে কতিপয় নির্দেশনা দেয়। নির্দেশনার আলোকে কমিশন ফুল বেঞ্চ শুনানি করে। নির্যাতিত গৃহকর্মী খাদিজার মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ায় কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ৫০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণের সুপারিশ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কমিশনের সুপারিশ না মানায় কমিশন মন্ত্রণালয়কে শুনানিতে আবার তলব করে এবং সুপারিশ মানতে বলে।

আরও পড়ুন : সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস কীভাবে ছড়ায়?

২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় খাদিজার নামে ৫০,০০০ টাকার একাউন্ট পে চেক ইস্যু করে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সরকার দায়বদ্ধ করার এটাই ছিল কমিশনের প্রথম সক্রিয় ভূমিকা।

অবৈধ কারাবাসে মানবাধিকার কমিশনের আর্থিক ক্ষতিপূরণের সুপারিশ—

"নামে নামে যমে টানে" শিরোনামে পত্রিকার খবর সংযুক্ত করে দশজন নিরপরাধ এবং নিরীহ ব্যক্তির অবৈধ কারাভোগের জন্য ক্ষতিপূরণসহ প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছিল সিসিবি ফাউন্ডেশন।

২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এরূপ আবেদন করা হয়। দীর্ঘদিন পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৪৪ পাতার প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ৮ জন ব্যক্তির নামের ভুলে অবৈধ কারাবাসের অভিযোগের সর্বশেষ শুনানি হয়। শুনানিতে কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জবাবে এবং প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

কমিশনের সুপারিশ নিম্মরূপ—

(১) নামের ভুলে মিজানুর রহমান ওরফে তোতলা মিজানের গ্রেফতার এবং পরবর্তীতে মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তার বা ক্ষতিপূরণ দিবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

(২) বাকি ৮ জনের (কারোর কারাবাস ২ সপ্তাহ, কারোর ৩ মাস) প্রত্যেককে ৫০ হাজার করে আর্থিক সহায়তা বা ক্ষতিপূরণের সুপারিশ করেছে কমিশন।

আরও পড়ুন : ভিন্নমতের প্রতি জিরো টলারেন্স! 

(৩) এই সুপারিশ কার্যকর করে কমিশন কমপ্লায়েন্স দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

(৪) কোনো অপরাধীর বা ব্যক্তির নামের আগে কোনো ধরণের অমর্যাদাকর পদবি (যেমন কান কাটা, তোতলা মিজান ইত্যাদি) নাম পুলিশ যাতে ব্যবহার না করে তার জন্য কমিশন নির্দেশনাও দিয়েছে।

(৫) কোনো ব্যক্তি বা অপরাধী গ্রেফতার করার পূর্বে পুলিশ যেন অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম পরিচয় মিলিয়ে নেয় সেই বিষয়েও কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে।

(৬) আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সাথে সাথে যেসব পুলিশ কর্মকর্তার গাফিলতি এইরূপ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমাদানের সুপারিশ করা হয়েছে।

উপসংহার

উপরোক্ত দুটি ক্ষেত্র ছাড়া মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক এবং দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করেছে কি না জানা নেই। এই যুগান্তকারী দুটো সুপারিশ কাজে লাগিয়ে আশা করবো কমিশন এখন থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিকার আদায়ে পদক্ষেপ নিবে।

কমিশন যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কাজ করলে সরকার অবশ্যই তার সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে বাধ্য। একান্ত না শুনলে কমিশন হাইকোর্টের কাছে যেতে পারে। ২০২০ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্ট ফুল বেঞ্চ রায় দিয়েছে যে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ মানতে সরকার বাধ্য। (The Government or public authority cannot disobey the recommendations made by the NHRC or State Human Rights Commission)। মানবাধিকার কমিশন তার দায়িত্বে অবিচল থাকুক। নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে অর্থবহ ভূমিকা রাখুক—এটাই আমাদের কাম্য।

মো. আব্দুল হালিম ।। অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট