চলচ্চিত্রের নাম ‘ওয়াটারওয়ার্ল্ড’ (Waterworld 1995)। কোনো এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বলতে গেলে পুরো পৃথিবী পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। যারা বেঁচে আছে, তারা পানির উপরেই ভাসমান কলোনি তৈরি করে নিয়েছে। এমন দুর্যোগময় সময়েও মারামারি কিন্তু থেমে নেই!

সুযোগ পেলেই এক কলোনি আরেক কলোনির ওপর হামলা চালায়, কেড়ে নেয় বেঁচে থাকার মূল্যবান সামগ্রী। সবাই কলোনিতে থাকে, তা নয়। কেউ কেউ নিজের অবলম্বন নিয়ে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ায়। তেমনই একজন চলচ্চিত্রের নায়ক। সে একটি বিশেষ নৌযানে বাস করে। প্রয়োজন না-হলে কোনো কলোনিতে ঢুঁ মারে না। নৌযানটিই তার বাড়িঘর।

ওয়াটারওয়ার্ল্ডে পানীয় জল দুষ্প্রাপ্য বস্তু। চারিদিকে পানি, কিন্তু লবণাক্ত। এই লবণাক্ত পানিকে পানযোগ্য করতে বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করা হয় কলোনিগুলোতে। স্বর্ণের দামে পানি কেনাবেচা হয় সেখানে। তবে, চলচ্চিত্রের নায়কের নৌযানে একটি ছোট্ট কিন্তু স্মার্ট যন্ত্রের কেরামতি দেখিয়েছেন পরিচালক। যন্ত্রটি নায়কের ত্যাগ করা মূত্র পরিশুদ্ধ করে পানযোগ্য করে তোলে। নায়ককে পানীয় জল নিয়ে তেমন একটা ভাবতে হয় না।

চলচ্চিত্রের জগৎ থেকে এবার আসুন বাস্তবে। অনেকটা সেই রকম একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। এই যন্ত্রও মানুষের ত্যাগ করা মূত্র বিশুদ্ধ করবে, পানযোগ্য করবে। তারা এমন একটি যন্ত্রের প্রোটোটাইপের নকশা আঁকার কাজ শুরু করেন ২০১২ সালের আগস্টে এবং ২০১৩ সালের শুরুতে কাজটি শেষ করেন। পরে সেই নকশার ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা একাধিক প্রোটোটাইপ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। অবশেষে তারা সফল হন। তৈরি হয় একটি কার্যকর যন্ত্র, যেটি দিয়ে মানুষের মূত্রকে পরিশোধনের মাধ্যমে পানযোগ্য করা যাবে।

যত সহজে বলে ফেললাম, ব্যাপারটি ততটা সহজ ছিল না মোটেই। কারণ, এই বিশেষ যন্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে মহাকাশে ব্যবহারের জন্য। মহাকাশের বিশেষ পরিবেশ ও বিভিন্ন জটিলতার কথা মাথায় রাখতে হয়েছে বিজ্ঞানীদের। অবশেষে তারা সম্ভাব্য সকল সমস্যার সমাধান করে যন্ত্রটি বানিয়েছেন। এটি মানুষের মূত্র থেকে ৮০ শতাংশ পানি বের করে আনতে সক্ষম।

মহাকাশের বিশেষ পরিবেশ ও বিভিন্ন জটিলতার কথা মাথায় রাখতে হয়েছে বিজ্ঞানীদের। অবশেষে তারা সম্ভাব্য সকল সমস্যার সমাধান করে যন্ত্রটি বানিয়েছেন। এটি মানুষের মূত্র থেকে ৮০ শতাংশ পানি বের করে আনতে সক্ষম।

আরও সহজ করে বললে, মূত্র থেকে প্রতি ঘণ্টায় আড়াই লিটার বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন করতে পারবে এই যন্ত্র। এই পানি হবে চীনের বিশুদ্ধ পানীয় জলের চেয়েও অধিক বিশুদ্ধ। এই পানি মহাকাশে কর্মরত নভোচারীরা পান করবেন এবং এদিয়ে অন্যান্য কাজ সারবেন। মজার তথ্য হলো, এই পানি থেকে অতি মূল্যবান অক্সিজেনও তৈরি হবে।

গত ২৯ এপ্রিল চীন তার নিজস্ব মহাকাশকেন্দ্রের যে মূল অংশটি মহাকাশে পাঠিয়েছে, সেটির সঙ্গে সংযুক্ত আছে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি। মূত্র থেকে পানি বের করে আনার এই যন্ত্রটি সেগুলোর একটি। চীন মহাকাশে কয়েকবার নভোচারী পাঠিয়েছে। তারা মহাকাশে নির্দিষ্ট সময় ধরে অবস্থানও করেছেন। কিন্তু তখন এমন একটি যন্ত্র ছিল না।

নভোচারীদের ত্যাগ করা মূত্র থেকে পানযোগ্য পানি বের করে আনার প্রয়োজনও হয়তো ছিল না। কিন্তু মহাকাশকেন্দ্র ভিন্ন জিনিস। এখানে নভোচারীদের মাসের পর মাস অবস্থান করতে হবে। ফলে, সেখানে এমন একটি যন্ত্র অত্যাবশ্যকীয় মনে করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।

সমুদ্র পরিবেষ্টিত হাইনান প্রদেশ থেকে ‘লংমার্চ ৫বি’ পরিবাহক রকেটের মাধ্যমে (এই রকেটের উচ্চতা ১৮ তলা ভবনের সমান) চীন তার নিজস্ব মহাকাশকেন্দ্রের মূল অংশটুকু মহাশূন্যে পাঠিয়েছে। সেটি এখন পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।

চীনের মহাকাশকেন্দ্রের নাম রাখা হয়েছে ‘থিয়ানকং’, যার অর্থ স্বর্গীয় প্রাসাদ। আর মহাকাশকেন্দ্রের মূল অংশের নাম ‘থিয়ানহ্য’, যার অর্থ স্বর্গের ঐকতান। এই অংশটুকু লম্বায় ১৬.৬ মিটার এবং এর ব্যাস ৪.২ মিটার। এর ওজন ১৫টি প্রমাণ সাইজের মোটরগাড়ির সমান। এর তিনটি বিভাগ, সংযোগ বিভাগ (connecting section), জীবন রক্ষাকারী ও নিয়ন্ত্রণ বিভাগ (life-support and control section) এবং কাঁচামাল বিভাগ (resources section)। ‘থিয়ানহ্য’ অংশই মহাকাশকেন্দ্রটির হৃদয়স্বরূপ। এখানেই নভোচারীরা বাস করবেন এবং এখানেই বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে।

থিয়েনহ্য’কে তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে, যাতে নভোচারীরা তুলনামূলকভাবে আরামে দীর্ঘকাল সেখানে অবস্থান করতে ও বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে পারেন। তাদের জন্য সেখানে থাকছে প্রায় ৫০ ঘনমিটার বিচরণস্থল। মহাকাশকেন্দ্রের সকল অংশ সংযুক্ত হয়ে গেলে বিচরণস্থল আরও বেড়ে দাঁড়াবে ১১০ ঘনমিটারে। এর মানে, তখন নভোচারীরা ১১০ ঘনমিটার জায়গা নিজেদের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। তুলনা করার জন্য বলছি, চীনের শেনচৌ মনুষ্যবাহী মহাকাশযানে নভোচারীদের বিচরণের জন্য মাত্র ৭ ঘনমিটার জায়গা ছিল।

থিয়েনহ্য-তে প্রতিজন নভোচারীর জন্য আলাদা কোয়ার্টার থাকছে। সেখানে তারা কাজ করতে, ঘুমাতে, খেতে ও ব্যক্তিগত অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে পারবেন। প্রতিজন নভোচারীর জন্য নির্দিষ্ট বিছানা থাকবে। বাথরুমও থাকবে আলাদা, যে সুবিধা চীনের নভোচারীরা এবারই প্রথম উপভোগ করবেন। নভোচারীদের অবস্থানকে আরামদায়ক করতে থিয়েনহ্য-তে ইনস্টল করা হয়েছে এয়ার কন্ডিশনার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, রেফ্রিজারেটর, পানি ধারক ও ট্রেডমিল। প্রতিজন নভোচারীর জন্য একটি করে বিশেষ মোবাইল ফোনও থাকবে, যা দিয়ে তিনি পৃথিবীর মানুষের সঙ্গে যেমন যোগাযোগ করতে পারবেন, তেমনি মহাকাশকেন্দ্রের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

চীনের মহাকাশকেন্দ্রের নাম রাখা হয়েছে ‘থিয়ানকং’, যার অর্থ স্বর্গীয় প্রাসাদ। আর মহাকাশকেন্দ্রের মূল অংশের নাম ‘থিয়ানহ্য’, যার অর্থ স্বর্গের ঐকতান।

আগেই বলেছি, থিয়েনহ্য-র সঙ্গে যখন বাকি অংশগুলো যুক্ত হবে, তখন নভোচারীদের জন্য বিচরণের জায়গা বেড়ে দাঁড়াবে ১১০ ঘনমিটারে। বাকি দুটি অংশ হচ্ছে দুটি মহাকাশ-গবেষণাগার। এ দুটি অংশ যুক্ত হলে চীনের মহাকাশকেন্দ্রের মোট ওজন দাঁড়াবে প্রায় ৭০ টনে। পরিকল্পনা অনুসারে, আগামী বছর মহাকাশ-গবেষণাগার দুটি উৎক্ষেপণ করা হবে। পাশাপাশি, শেনচৌ-১২ ও শেনচৌ-১৩ নামক দুটি মনুষ্যবাহী যানও পাঠানো হবে মহাকাশকেন্দ্রে। এসব যানে করে নভোচারীরা থিয়ানকং-এ যাবেন মহাকাশকেন্দ্রটির চূড়ান্ত রূপ দিতে।

আশা করা হচ্ছে, ২০২২ সালের শেষ নাগাদ চীনের মহাকাশকেন্দ্রটি পুরোপুরি কাজ করা শুরু করবে। পুরোপুরি চালুর পর, মহাকাশকেন্দ্রে সবসময় তিন জন করে নভোচারী অবস্থান করবেন। বর্তমানে তারা কঠোর প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এই ১৮ জন নির্বাচিত নভোচারীর ১৭ জন পুরুষ ও একজন নারী।

থিয়েনহ্য উৎক্ষেপণ ছিল চীনের মনুষ্যবাহী মহাকাশযান কার্যক্রমের তৃতীয় ধাপের শুরু। চীনের সরকার এই কার্যক্রম অনুমোদন করেছিল ১৯৯২ সালে। প্রথম দুটি ধাপে চীন সাফল্যের সঙ্গে মহাকাশে ছয়টি মনুষ্যবাহী যান পাঠায়। পাশাপাশি ছিল দুটি পরীক্ষামূলক মহাকাশ-গবেষণাগারের উৎক্ষেপণ। বস্তুত, এই দুটি মহাকাশ-গবেষণাগারকে বলা চলে চীনের মহাকাশকেন্দ্রের ভিত্তি। এর মাধ্যমে চীনা বিজ্ঞানীরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন, অর্জন করেছেন বিভিন্ন অভিজ্ঞতা।

চীনের প্রথম মহাকাশ-গবেষণাগার ‘থিয়ানকং ১’ মহাশূন্যে পাঠানো হয় ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে। একটি স্কুল বাসের সমান এই মহাকাশ-গবেষণাগারটির ওজন ছিল ৮.৫ মেট্রিক টন। এর মেয়াদ ছিল দু’বছর। কিন্তু সেটি ক্রিয়াশীল ছিল প্রায় সাড়ে চার বছর। চীনের শেনচৌ-৮, শেনচৌ-৯ ও শেনচৌ-১০ মনুষ্যবাহী মহাকাশযান ‘থিয়ানকং ১’-এর সাথে সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।

চীনের প্রথম নারী নভোচারী লিউ ইয়াং শেনচৌ-৯ মিশনে ছিলেন। আর চীনের দ্বিতীয় নারী নভোচারী ওয়াং ইয়াফিং ‘থিয়ানকং ১’-এ গিয়েছিলেন শেনচৌ-১০ মিশনের অংশ হিসেবে। ‘থিয়ানকং ১’ থেকে তিনি ৪০ মিনিটের একটি লেকচার দেন, যা টেলিভিশনের মাধ্যমে চীনের ৮০ হাজার স্কুলের ৬ কোটি শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ করে।

অন্যদিকে, চীনের দ্বিতীয় মহাকাশ-গবেষণাগার ‘থিয়ানকং ২’ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে মহাকাশে পাঠানো হয়। এটির ওজন ছিল ৮.৬ টন। সে বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে শেনচৌ-১১ মিশনের দু’জন চীনা নভোচারী এই গবেষণাগারে কাজ করেন। এই গবেষণাগারের মেয়াদ ছিল দু’বছর। কিন্তু এটি মহাশূন্যে প্রায় ১০০০ দিন ক্রিয়াশীল ছিল। ‘থিয়ানকং ২’-এর সঙ্গে শেনচৌ-১১ মনুষ্যবাহী যান ও ‘থিয়ানচৌ ১’ কার্গো মহাকাশযান সংযুক্ত হয়েছিল। এসময় বিজ্ঞানীরা নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। তারা বলছেন, থিয়ানকং ১ ও ২’ মহাকাশ-গবেষণাগার দেশের নিজস্ব মহাকাশকেন্দ্র গড়ে তোলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নাসা’র সাবেক প্রশাসক ও মহাকাশচারী চার্লস বোলডেন একবার বলেছিলেন, চীন যে একের পর এক চাঁদে ও মঙ্গলে মহাকাশযান পাঠাচ্ছে, তা তার জন্য চিন্তার বিষয় নয়; তার কাছে চিন্তার বিষয় হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু ও অংশীদাররা চীনের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলছে। তিনি আরও বলেন, চীনকে নিজের মহাকাশকেন্দ্র গড়ে তুলতে দিয়ে মার্কিন প্রশাসন তৃপ্তি বোধ করছে, যা ভালো নেতৃত্বের লক্ষণ নয় মোটেই। বস্তুত, চীন আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্র প্রকল্পে যোগ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু মার্কিন প্রশাসন তা হতে দেয়নি। এখন বোলডেনের মতো অনেকেই বলেছেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্র প্রকল্পে চীনকে অংশ নিতে না দিয়ে মার্কিন প্রশাসন মারাত্মক ভুল করেছে। কারণ, বাধ্য হয়ে চীন একাই মহাকাশে নিজের জন্য স্থায়ী একটি স্টেশন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়। দেশটি এখন মহাকাশ-প্রযুক্তিতে এতোটাই এগিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য ছাড়াই বড় বড় মহাকাশ-গবেষণা চালাতে পারছে।

আসলে, আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্র প্রকল্পে অংশগ্রহণের সুযোগ না পাওয়া যে চীনকে নিজস্ব মহাকাশকেন্দ্র গড়ে তুলতে উৎসাহিত করেছে, তা বললে ভুল হবে না। বলা চলে, যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা চীনের জন্য শাপে বর হয়েছে। আরও উদার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, এটা গোটা বিশ্বের জন্যই শাপে বর হয়েছে। কেন? কারণ, আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রের মেয়াদ আছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। আর চীনের মহাকাশকেন্দ্রটির মেয়াদ ১৫ বছরের। এর অর্থ বিশ্ব একটা লম্বা অন্তর্বর্তীকালীন সময় পাবে নতুন আরেকটি মহাকাশকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য। আর মাঝখানের সময়টায় বিশ্ব মহাকাশকেন্দ্রের শূন্যতাও বোধ করবে না। কারণ, চীন অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রের মতো মহাকাশ-গবেষণাতেও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পক্ষে।  চীনের মহাকাশকেন্দ্রের সঙ্গে বিদেশি মহাকাশযানের ডকিংয়ের বা সংযুক্তির সুযোগও তাই উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এ জন্য অবশ্য বিদেশি মহাকাশযানে চীনা মানের ডকিং হ্যাচ (docking hatch) থাকতে হবে।

আলিমুল হক ।। বার্তা সম্পাদক, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)