প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটকে ‘লুটপাটবান্ধব বাজেট’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদের গেটে সাংবাদিকদের কাছে বাজেটের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বাজেটে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখানো হয়েছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি মানে রেন্টাল, কুইক রেন্টাল দিয়ে লুটপাট করা হবে। এই বাজেট লুটপাটবান্ধব বাজেট।

তিনি বলেন, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট সংসদে উত্থাপন হয়েছে। এই প্রথম সম্পূর্ণ বাজেট ডিজিটালি উত্থাপন করা হয়েছে। সাধারণত দেখা যায়, অর্থমন্ত্রী বাজেটের কিছু অংশ পাঠ করেন...। এই সরকারের মেয়াদে পূর্ণাঙ্গ শেষ বাজেট। এই মুহূর্তে বাজেটের পূর্ণাঙ্গ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’

বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ তবে যেটুকু আমি লক্ষ্য করেছি- এটি একটি লুটপাটের বাজেট। প্রায় পৌনে ৭ লাখ কোটি টাকার এই বাজেট ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণ নির্ভর। এর মধ্যে বিদ্যুৎ সেক্টরে বিপুল পরিমাণে ঘাটতি দেখানো হয়েছে যা ভর্তুকি দেওয়া হবে। এর পরিমাণ প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকা। যেটা সম্পূর্ণ লুটপাট।

তিনি বলেন, ‘কুইক রেন্টালসহ অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হোক। এই ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ঘাটতি দেওয়া হচ্ছে। গ্যাস-জ্বালানির ঘাটতি দেখিয়ে দাম বৃদ্ধি করে জনগণের ওপর বোঝা চাপানো হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতির যে বৃদ্ধি ঘটবে সেটি নিয়ন্ত্রণের জন্য উল্লেখযোগ্য ঘোষণা এ বাজেটে পাইনি। বাজেট সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য আমরা পরে দেব।’

২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে জাতীয় সংসদে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। আগামী অর্থবছরে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যেখানে বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

এইউএ/ওএফ