বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শুধু আমাদের জন্য নয়, গোটা জাতির জন্য খারাপ সময় যাচ্ছে। অত্যন্ত খারাপ সময় অতিবাহিত করছি আমরা।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কাফরুল থানার ৪টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অসুস্থ এস এ খালেককে দেখতে তারা বাসায় যান বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখন যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তারা দেশের মানুষের সব অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা এই দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

তিনি বলেন, আমরা কোনো পরিবার, দল বা গোষ্ঠীর জন্য যুদ্ধ করিনি। আমরা এই দেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি। আমাদের দুর্ভাগ্য আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এসেও আমাদের কোনো স্বাধীনতা নেই।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে দেখেন খালেক সাহেবের বাসায় এসে সম্মেলন করতে হয়েছে। কেন আজকে আমরা বড় একটা টাউন হলে প্রোগ্রাম করতে পারছি না? কারণ পুলিশ আমাদের প্রোগ্রাম করতে দেয় না। আওয়ামী লীগ ও সরকারি গুন্ডারা আমাদের প্রোগ্রামে বাধা দেয়। এটাতো হওয়ার কথা না। তাদের যে অধিকার, আমাদেরওতো সেই অধিকার রয়েছে। এই দেশটাতো সবার। আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে দেশ ততদিন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সরকার উন্নয়ন-উন্নয়ন বলে পাগল হয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নটা কোথায়? তারা অবকাঠামো বানাচ্ছে আর নিজের পকেট ভরছে। শতকরা ৪২ ভাগ লোক এখনও দারিদ্র সীমার নিচে চলে গেছে। একটা মানুষ আজকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পায় না। বেশি টাকা না থাকলে মানুষ হাসপাতালে যেতে পারে না। অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালে গেলে কোনো চিকিৎসা পাওয়া যায় না।

আওয়ামী লীগ আজকে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, শিক্ষার অবস্থা এতটাই নিচে নেমে গেছে যে, আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ থেকে যারা বের হয় তারা বাইরে কোথাও জায়গা পায় না। সাধারণ মানুষের জন্য এই সরকার কোনও কাজ করে না।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের সারাদেশে সম্মেলন করে প্রতিনিধি নির্বাচন করার লক্ষ্য একটাই, এদেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য গণতান্ত্রিকভাবে সংগ্রাম-লড়াই করব। এই লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আবার আমরা এই দেশটাকে স্বাধীন করব। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনব, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। আজকে এই সংগ্রাম কোনও ব্যক্তির জন্য নয়। এটা দেশকে রক্ষা করার জন্য। ১৯৭১ সালে আমরা যে সংগ্রাম করেছিলাম সেই একইভাবে এই দেশকে বাঁচানোর জন্য আমাদের আবার যুদ্ধ করতে হবে। এই যুদ্ধে আমাদের জয়লাভ করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কোথাও সংগঠিত হতে গেলেই তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গতকাল (বুধবার) ঢাকা বারে দুই জন উকিলকে গ্রেপ্তার করে তাদেরকে রিমান্ডে দিয়েছে। কোন জায়গায় আছি আমরা, একজন উকিলকেও রিমান্ডে নেওয়া হয়। আজকে আমাদের কোনো পথ নেই, কোন বিকল্প নেই, আমরা যদি বাঁচতে চাই, দেশকে বাঁচাতে চাই, তার জন্য একটাই পথ আন্দোলন-আন্দোলন।

কাউন্সিলে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এ সিদ্দিক সাজু প্রমুখ।

এস খালেকের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেওয়ার সময় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন, দলের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, নির্বাহী কমিটি সদস্য সাঈদ সোহরাব, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।

এএইচআর/আইএসএইচ