স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামী ১ মার্চ রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেকশোরে কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দলটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজই এ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সম্পাদক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত দেওয়া হবে। আজই তাকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হবে। জিয়াউর রহমানের বীর উত্তর খেতাব নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান পদবি কারও দয়ায় অর্জন করেননি। কোনো সরকার বা ব্যক্তির অনুকম্পায় নয়, তিনি এটা অর্জন করেছিলেন একটা ঘোষণার মধ্য দিয়ে। একটা জাতিকে স্বাধীনতার যুদ্ধে অনুপ্রাণিত করে সেই ঘোষণার মধ্যে দিয়ে এ পদবি অর্জন করেছিলেন। তাকে এ খেতাব দিয়েছিল স্বাধীনতার পরে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার। সুতরাং স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সেটাকে তুলে নেওয়ার যে অপচেষ্টা তা জনগণ কোনো দিন মেনে নেবে না। আর বিএনপিতে সবচেয়ে বেশি সম্মুখযুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা আছে। আজ খালেদা জিয়া কারাবরণ করে আছেন তার একমাত্র কারণ হলো তিনি গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে চান।

স্বাধীনতা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা কোনো গোষ্ঠী বা দলের নয়। স্বাধীনতা এ দেশের লাখ-কোটি মানুষের সম্পদ। বাংলাদেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। জিয়াউর রহমানকে কে খেতাব দিল আর না দিল তাতে তার কিছু যায় আসে না বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, তিনি (জিয়াউর রহমান) মানুষের অন্তরে আছেন।

বিএনপির সুবর্ণজয়ন্তী পালন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, কারও সুবর্ণজয়ন্তী করছি? স্বাধীনতার করছি। এটা আমার, এ দেশের মানুষের। এটা আমার স্বপ্ন, আমার বাস্তবতা। এটা আমার সবকিছু, লক্ষ্য উদ্দেশ্য। এ স্বাধীনতার মধ্যে দিয়ে একটা জাতির নির্মাণ হয়েছে। সুতরাং এটা নিয়ে কে কি বলল সেটা বড় কথা নয়। আমরা পুরোপুরিভাবে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। দুর্ভাগ্য, যে দলটি স্বাধীনতার পরে ক্ষমতায় এসেছিল তারাই এখন একমাত্র স্বাধীনতার দাবিদার। 

তিনি আরও বলেন, আমরা অবশ্যই স্বীকার করি দেশের স্বাধীনতার একটা অংশে তাদের ভূমিকা আছে। একটা বিশেষ সময়ে তারা ভূমিকা পালন করেছে। আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে চাই। সবাইকে তার অবদানের স্বীকৃতি দিতে হবে। জাতীয় নেতৃবৃন্দের যারা শুরু থেকে স্বাধীনতার কথা বলে আসছে, যারা কাজ করেছে, যারা আন্দোলন করেছে, কারাবরণ করেছেন, অবশ্যই তাদের সম্মান-মর্যাদা দিতে হবে। যে ব্যক্তির ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তাকেও তার সম্মান দিতে হবে। এটা যারা করতে চান না, তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না। আমি জোর দিয়ে বলছি, যারা জিয়াউর রহমানের অবদান অস্বীকার করতে চান, তারা মূলত স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেন। 

মতবিনিময় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এএইচআর/এসএসএইচ