বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করলে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা বাস পোড়ানোর ভয়ে বন্ধ করে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

বুধবার (০৩ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির নবনির্বাচিত সদস্যদের পরিচিতি ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। তিনি বলেন, বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করলে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা বাস পোড়ানোর ভয়ে বন্ধ করে দেয়। অথচ বিএনপি দায় চাপায় সরকারের ওপর। আন্দোলন এবং নির্বাচনে ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর বিএনপি এখন পুলিশকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি’র সমাবেশের কারণে বাস মালিকরা জ্বালাও পোড়াওয়ের ভয়ে বাস চালানো বন্ধ করে দেয়। এতে সরকারের কোনো হাত নেই। বিএনপি লাঠিসোটা দিয়ে পুলিশকে পেটাচ্ছে, এটা জনগণ দেখছে। এটাই বিএনপির রাজনীতি। বিএনপি তাদের নেতিবাচক রাজনীতির ধারা থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির নেতিবাচক ও অপরাজনীতিতে দেশের চলমান উন্নয়ন ধারাই শুধু বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের বিকাশধারা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, জন্মলগ্ন থেকে বিএনপি গণতন্ত্রের মুখোশের আড়ালে গণতন্ত্র হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে। তারা এখনও সেই ধারাবাহিকতাই চর্চা করে চলেছে। জনগণ আশা করেছিল নির্বাচন ও আন্দোলনে ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে তোষণ ও পোষণ করা ত্যাগ করবে, কিন্তু তারা তা না করে উল্টো গাঁটছড়া বেঁধে আছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে সখ্যতা রেখে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের সঙ্গে রসিকতা আর তামাশা ছাড়া কিছু নয়। বিএনপির আন্দোলন, সমাবেশ, মিছিল, মানববন্ধন মানেই হচ্ছে সহিংসতা আর সন্ত্রাস। জনগণ তাদের কর্মসূচিতে এখন ভীত সন্ত্রস্ত। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের জনগণই বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা বানিয়েছেন আর শেখ হাসিনাকে করেছেন বিশ্বের সেরা তিনজনের একজন সেরা রাষ্ট্রপ্রধান। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে- এবিষয়ে গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রচার হয়েছে তা সত্য নয়। আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত এধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, এমনকি আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী কোনো সভায়ও এধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, বিএনপি ইউপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার প্রকাশ্য ঘোষণা দেওয়ার পরও স্থানীয়ভাবে তাদের দল সমর্থিত প্রার্থীদের প্রস্তুতি নেওয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে বিএনপি দেখেছে তাদের কোনো ভোট নেই, জনভিত্তি নেই। তাই তারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পাঁয়তার করছে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকেই উপ-কমিটিতে নাম লিখিয়ে আর খোঁজ খবর পাওয়া যায় না। উপ-কমিটির সদস্য পদে নাম লিখিয়ে কেউ কেউ কার্ড ছাপিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবার একজন বিভিন্ন কমিটিতে নাম লেখান, তাদের নাম সব কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, উপ-কমিটিতে নাম লিখিয়ে কেউ চাঁদাবাজি অথবা ক্ষমতার দাপট দেখালে সঙ্গে সঙ্গে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে। 

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ প্রান্তে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য সচিব সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী,স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপাসহ উপকমিটির সদস্যরা।

এর আগে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির নবনির্বাচিত সদস্যরা।

এইউএ/জেডএস