ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রলীগের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এস এম জানে আলম জনি। তিনি ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের স্কুল ছাত্রবিষয়ক উপ-সম্পাদক।

গতকাল শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগে জানানো হয়।

অভিযোগে যে তিন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয় তারা হলেন- পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের মো. নূর উদ্দিন আহমেদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের ফজলে রাব্বি ও একই সেশনের মুন্তাসির শুভ। তারা সবাই সার্জেন্ট জহুরুল হলের আবাসিক ছাত্র এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের অনুসারী।

থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নূর উদ্দিন, ফজলে রাব্বি ও মুন্তাসির শুভসহ ৮-১০ জন মল চত্বর এলাকায় জনিকে একা পেয়ে শারীরিকভাবে হেনস্তা করে টাকা-পয়সা ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র কেড়ে নেয়। এ সময় তারা বলে, ‌‘তুই নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্টেড, তোরে কে নেতা বানাইছে সেটা আমি দেখতে চাই’। হামলাকারীরা ভিকটিমের সাথে থাকা মোবাইল ফোন নেওয়ার চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে নগদ টাকা, হলের আইডি কার্ড ও ব্যাংকের এটিএম কার্ড হাতিয়ে নেয়। পরে জানে আলম জনির কয়েকজন বন্ধু এসে তাকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জানে আলম জনি বলেন, আমাকে একা পেয়ে এই তিনজনসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন আমাকে হেনস্তা করে এবং মানিব্যাগ নিয়ে যায়। মানিব্যাগে ৫ হাজার টাকা ও একটি এটিএম কার্ড ছিল। আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছি। এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আশা করছি তারা দ্রুত আইনের আওতায় আসবে।

তবে অভিযুক্ত তিনজনই ছিনতাইয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তারা জানান, সিলেট জেলা ছাত্র সংগঠনকে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে, এর বাইরে কোনো কিছু হয়নি। বিষয়টি সমাধান না হলে তারা মানহানির হামলা করবেন।

অভিযুক্ত নূর উদ্দিন আহমেদ বলেন, ছিনতাইয়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি সিলেট জালালাবাদ ছাত্রকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। কিন্তু জানে আলম সংগঠনের প্যাডে নিজের নাম লিখে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক দাবি করছেন এবং আমাদের ফেসবুক গ্রুপ থেকে আমাদের বাদ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়েছে। সিনিয়ররা এটা নিয়ে কথাও বলেছেন। কিন্তু সকালে দেখি তিনি শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় আমরা বিব্রত। সিনিয়ররা এটা নিয়ে বসবেন। যদি সমাধান না হয় তাহলে আমরা মানহানির মামলা করব।

অভিযোগের বিষয়ে ফজলে রাব্বি বলেন, আমার বন্ধু নূর উদ্দিনের ডাকে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে হামলা বা ছিনতাইয়ের ঘটনা হয়নি। ওই সময় শত শত মানুষ ছিল, এমন জায়গায় ছিনতাই হওয়াটাই হাস্যকর। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন তিনি।

একই বক্তব্য দিয়েছেন আরেক অভিযুক্ত মুন্তাসির শুভ। এ ঘটনায় মানহানি মামলা করার কথাও জানান তিনি।

জহুরুল হক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জহুরুল হক ছাত্রলীগ জড়িত নয়। এটা তাদের ব্যক্তিগত ঝামেলা। কারো ব্যক্তিগত দায় হল ছাত্রলীগ নেবে না। 

এইচআর/ওএফ