আগামী দিনে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই সরকারকে বিদায় করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বুধবার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে, এজন্য আজকে বাংলাদেশের লোডশেডিং। আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রী তিনি বলেছিলেন, এই লোডশেডিংকে মিউজিয়ামে পাঠিয়েছেন, জাদুঘরে পাঠিয়েছেন। জনগণের প্রশ্ন, জাদুঘর থেকে কীভাবে এই লোডশেডিং সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ল। আজকে মানুষের জীবন দুর্বিসহ। আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাট এবং অর্থ পাচারের কারণে আজকে ডলার নেই। তাই দেশে অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।

‘আজ গরিব মানুষ খেতে পারছে না। মধ্যবিত্ত মানুষ দুর্বল হয়ে গেছে। যারা ভোট চুরি করেছে তারা এই অর্থনীতিকে কোনদিন উদ্ধার করতে পারবে না। যে সরকার দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদের দ্বারা মানবাধিকার রক্ষা হবে না। যারা লুটপাট করেছে তাদের দ্বারা এদেশের অর্থনীতি মেরামত করা সম্ভব নয়।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, আজ একটাই দাবি- এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সে নির্বাচনে জনগণ নিজের হাতে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। তাহলে এ দেশের জনগণের রায়ে পরবর্তী সরকার হবে খালেদা জিয়ার সরকার, তারেক রহমানের সরকার।

বিএনপির এই নীতি নির্ধারক বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন- রাজপথে ফয়সালা হবে। অতএব রাজপথে ফয়সালা করে এই স্বৈরাচারীর ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে। তাই আমাদের একটাই দাবি, অনতিবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এবং জনগণের সরকার নির্বাচিত হয়ে এদেশের সমস্যার সমাধান করবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না, তাই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এই সরকার গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত। তারা জনগণের সরকার নয়। যারা ভোট ডাকাতি করে সরকারে এসেছে, যারা ভোট ছাড়া পার্লামেন্টে গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে, তারা গণতন্ত্রের সম্মান দিতে পারে না তারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না।

মোশাররফ বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল তখন গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। আবার এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতা থাকার জন্য গণতন্ত্রকে সর্বস্তরে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের ভোটের আজ অধিকার নেই।

বিভাগীয় সমাবেশগুলোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যতগুলো বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে সবাই দেখেছে, তা সর্বকালের বৃহৎ সভা হয়েছে। ভবিষ্যতে ইনশাল্লাহ যত বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করুক তা উপেক্ষা করে সব সমাবেশ সফল হবে। এই সরকার শুধু আমাদের কাছেই নয় তারা আন্তর্জাতিকভাবে ধিকৃত। তারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে। এই সরকারের আমলে দেশে মানবাধিকার নেই।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর যৌথ সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, মীর সরাফত আলী সপু, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান ও ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।

এএইচআর/এসএম