অনুমতি পাওয়ার পরই রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে আসতে শুরু করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিকেল গড়াতেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে মতিঝিল এলাকার এ মাঠটি। মাঠে গ্রুপে গ্রুপে বসে অবস্থান নিয়েছেন তারা। এসময় তাদের বিভিন্ন ধরনের সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে ও গান পরিবেশন করতে দেখা গেছে।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর সরেজমিন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী মাঠে বসে সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দিচ্ছেন। এছাড়া মাঠের চার দিকে গ্রুপে গ্রুপে নেতাকর্মীদের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সিলেট জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি মিনার হোসেন লিটন বলেন, সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পরপরই আমরা গোলাপবাগ মাঠে চলে আসি। তবে মাঠে কোনো লাইটের ব্যবস্থা করা হয়নি। তাই অন্ধকারের মধ্যে আমরা মাঠে বসে আছি। মাঠে বসে সরকারবিরোধী গান ও স্লোগান দিয়ে কর্মীদের উজ্জীবিত করা হচ্ছে।

এদিকে মাঠের বাইরে আশপাশের রাস্তাগুলোতেও বিএনপি নেতাকর্মীদের মিছিল করতে দেখা গেছে।

বিএনপির নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দাবি আদায়ের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক লাখ নেতাকর্মী ঢাকায় এসেছে। সমাবেশ সফল করে এবং আগামী দিনের কর্মসূচি নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরতে চান তারা।

১০ ডিসেম্বর সমাবেশের জন্য বিএনপি শুরু থেকেই নয়াপল্টনের সড়ক ব্যবহারের দাবি জানিয়ে আসছিল। আর সরকার শুরু থেকেই বলে আসছিল নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। বিএনপিকে সমাবেশ করতে হবে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

তবে সোহরাওয়ার্দীর বিষয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল বিএনপি। তারা আরামবাগ ও সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট স্কুলের মাঠের প্রস্তাব দিলেও পুলিশ তাতে রাজি হয়নি।

এরইমধ্যে বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের। এতে একজন নিহতও হয়। সংঘর্ষের পর বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ এবং ওই এলাকা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের হটিয়ে দিয়ে নিজেরা নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এরপর বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার পুলিশ কমিশনারের সাথে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠকে তারা নয়াপল্টনের পরিবর্তে ঢাকার কমলাপুরে স্টেডিয়ামে সমাবেশের প্রস্তাব দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে মিরপুরের বাংলা কলেজ মাঠে সমাবেশের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এসবের পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে তাদের বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তুলে নেওয়ার ৮ ঘণ্টা পর ডিবি তাদের আটকের কথা স্বীকার করে। আর দুপুর আড়াইটার পর ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদ জানান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে পল্টন থানায় দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এমএম/এসএসএইচ/