জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, জনপ্রতিনিধিরা জনগণের দয়ায় নির্বাচিত হয়। জনগণ তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে। সরকারের এমপি, মন্ত্রীরা যেমন সংসদে জবাবদিহিতা করে ঠিক তেমনি প্রতিটি জনপ্রতিনিধির উচিত তার নির্বাচকমণ্ডলীর সামনে জবাবদিহি করা।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল চত্বরে জয়পুরহাট জেলার শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত ‘প্রিয় ভূমির মেধাবীদের মুখোমুখি জনপ্রতিনিধি’ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে তিনি জয়পুরহাট জেলার নানা বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন।

জয়পুরহাটের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, কয়েক বছর আগেও শিক্ষাব্যবস্থায় আমরা অনেকটাই পিছিয়ে ছিলাম। এর কারণ ছিল বিরোধিতা, মারামারি, মামলা-হামলা। আমি চেষ্টা করেছি প্রথমেই গ্রাম-শহরের মধ্যে একটা সহাবস্থান গড়ে তোলার। আমরা কখনো বিরোধী দলের সঙ্গেও মারামারিতে জড়াইনি, তাদের কোনো ক্ষতি করিনি। আমরা চেয়েছি, আমাদের সন্তানরা লেখাপড়া করুক। করোনার কারণে শিক্ষাব্যবস্থা কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও বর্তমানে সেটি এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি।

জয়পুরহাটের চিকিৎসা সেবা নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের জয়পুরহাটের আধুনিক হাসপাতাল দেশের অন্যান্য হাসপাতাল থেকে অনেক ভালো। এ হাসপাতালকে আমাদের পাঁচটি উপজেলার পাশাপাশি পাশের জেলার রোগীদেরও চিকিৎসা দিতে হয়, যার কারণে যথেষ্ট চাপ পড়ে। আমাদের আধুনিক হাসপাতালকে ইতোমধ্যে ২৫০ শয্যায় উন্নত করা হয়েছে। ২৫০ শয্যা পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে আমাদের চিকিৎসা সেবার মান অনেকটাই বেড়ে যাবে।

জয়পুরহাটের মেধাবীদের নিয়ে আপনার ভাবনা কি— এমন প্রশ্নের জবাবে হুইপ বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের সুন্দর জীবন দিতে চাই। তারা যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের কাছে আসবে। আমি জয়পুরহাটের মানুষের খাদেম। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যা হলে নিকটস্থ আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করলেই হবে। তারা আমাকে বিষয়টা জানালে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। আমি সবসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি।

জয়পুরহাটে অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে কি না— এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জয়পুরহাটে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য আমি অনেক আগে থেকেই চেষ্টা করেছি। তখন কিছু মানুষ এর বিরোধিতা করে। তারা সরকারি জমি দখল করেছিল। আমরা যখন অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে যাই তারা তখন আন্দোলন ও মানববন্ধন করলে পরিবেশ কিছুটা নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে বৈশ্বিক মন্দা চলছে, এখন হওয়াটা খুবই কঠিন। মন্দাটা একটু ভালো হলে সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার কাজ চালিয়ে যাব।

তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের বিষয়ে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ ব্যাপক এগিয়ে গেছে। আমাদের জয়পুরহাট পিছিয়ে নেই। আমরা আমাদের জেলার প্রতিটা ইউনিয়নে শেখ কামাল ডিজিটাল সেন্টার গঠন করেছি। কিন্তু বিষয় হলো আমরা সেটা ভালোভাবে ব্যবহার করতে জানি না। যার কারণে আমাদের সন্তানরা সেইভাবে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগোতে পারছে না। আমরা চেষ্টা করছি নানা উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের সন্তানেরা তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে পারে।

কৃষকদের সার সংকট নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে সারের কোনো সংকট নেই। কখন কোন জেলায় কতটুকু সার লাগবে তা সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেওয়া আছে। যখন সার দরকার আমরা তার আগেই কিনতে যাই, যার কারণে কখনো কখনো সারের সংকট তৈরি হয়। এ সুযোগে কিছু ডিলার সারের দাম বাড়িয়ে দেয়। আর পাশাপাশি আমাদের বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষের একটি বিরাট অংশ ব্যবসায়ী। যারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এই কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। আমাদের জেলায়ও একই অবস্থা।

অনুষ্ঠানে জয়পুরহাট জেলার জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনের নেতারাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ওএফএ/এসএসএইচ/