ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেছেন, আগামী নির্বাচনে ভিপি নূর, কল্যাণ পার্টি কিংবা বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার নির্বাচন নয়, আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের অস্তিত্বের নির্বাচন। এই নির্বাচন যেভাবেই হোক অবাধ ও সুষ্ঠু করতে হবে। আমাদের দাবি একটাই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সংবিধানের মধ্যে থেকে বিএনপি বা বিরোধী দলকে নাকি প্রয়োজনে মন্ত্রিত্ব দেবেন। এটা কি আওয়ামী লীগের কমিটি যে আপনি কাউকে ভাইস চেয়ারম্যান বানাবেন! বিরোধী দলের কে মন্ত্রী কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবে সেব্যাপারে আপনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কে? আপনিই তো অবৈধভাবে ক্ষমতায় রয়েছেন।

সোমবার (৮ মে) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রবাসী অধিকার পরিষদের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় এসব কথা বলেন নুর।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে নুর বলেন, সহযোগিতার রাস্তা একটাই নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসেন, আমরা সহযোগিতা করব। স্পষ্ট কথা, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল, তা আপনারা গুম করেছেন। তা ফিরিয়ে নিয়ে আসেন তাহলে কোনো শঙ্কা, সহিংসতা সমস্যা থাকবে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নাকি স্থায়ী কোনো নির্বাচন ব্যবস্থা না। তাহলে সব দলের সঙ্গে ডায়ালগ করুন। কীভাবে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করা যায়, স্থায়ী নির্বাচন ব্যবস্থা করা যায়। যদি সেটা না করেন তাহলে অতীতে যেমন স্বৈরাচারের পতন হয়েছে আপনাদেরও পতন হবে, ততো দিনে হয়তো দেশের আরো অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের নামে আমদানি রপ্তানির নামে অর্থ পাচারে সরকারদলীয় লোকজন ও আমলা জড়িত দাবি করে নুর বলেন, দুবাইয়ে ৪৫৯ জনের প্রফাইল নিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে। দুদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। কল্যাণ পার্টির ইবরাহিম, গণঅধিকার পরিষদের আমি কিংবা বিএনপি যদি করত তাহতে এতো দিনে তো তাদের ক্রস ফায়ার দিতো সরকার, বিচারের সম্মুখীন করা হতো। অর্থপাচারের বিষয়টি বার বার আলোচনায় এলেও তাদের বিচার কিন্তু করা হচ্ছে না। কারণ কি? কারণ অর্থপাচারকারীরা সবাই সরকার দলীয় কিংবা আমলা।

তিনি বলেন, একটা সময় মানুষ রিজার্ভ কি সেটাই জানতো না। এখন সবাই বোঝে। কেনো রিজার্ভ কমল সবাই এখন প্রশ্ন করছেন। দেশের এমপি-মন্ত্রী-আমলার ব্রিফকেস ভরে ডলার পাচার করার কারণে রিজার্ভ ফুরিয়ে এসেছে। অনিয়ম করলে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণেই এমনটা হয়েছে। ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরে যান। আমাদের ক্ষমতা ছেড়ে দেন, এক বছরের মধ্যই পরিবর্তন করে দেব।

তিনি আরো বলেন, আজ প্রবাসীরা নানাভাবে অবহেলিত হচ্ছেন। তাদেরকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না, সম্মান দেওয়া হয় না। তারা কষ্টে থাকলেও প্রবাসে দেখার কেউ নেই। দেখার সময় কই, দেশের মধ্যে লুটপাট চলায় ব্যস্ত। প্রবাসীরা ঘর বানাতে গেলে যুবলীগের কাছ থেকে ইটের খোয়া কিনতে হবে, ছাত্রলীগের কাছ থেকে বালি কিনতে হবে। এভাবেই লুটপাট করা হচ্ছে চারিদিক।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান, বীর প্রতীক মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির অঙ্গসংগঠন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, গণঅধিকার পরিষদ নেতা রাশেদ খান, তারেক রহমান।

জেইউ/এমএ