ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সোপান রচিত হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এতো বছরও পরও সেই ভাষা আন্দোলনের শহীদ ও সৈনিকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা রাষ্ট্র আজও প্রণয়ন করতে পারে নাই।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশের (ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও  মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ মন্তব্য করেন।

তারা বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের এতো সময় পরও শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা না হওয়া রাষ্ট্রের ব্যর্থতা, গত ৫৩ বছরের শাসকদের ব্যর্থতা। কেউই এই ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারে না। 

তারা বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের এতো সময় পরও শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয়নি। প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ১৯৫২ সালের ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারি বাহিনীর গুলিতে বহু লোক নিহত হলেও তারা সবাই স্বীকৃতিও পাননি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ভাষা শহীদ আসলে কতজন এই তথ্য চিরকাল অজানা থেকে যাবে যদি সরকার সংরক্ষিত তথ্যাদি প্রকাশ না করে। 

তারা আরো বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে ভাষা আন্দোলন থেকেই আমাদের জাতীয়তাবোধের জন্ম, স্বাধীনতার বীজ অন্তরে গেঁথেছে। ভাষা আন্দোলনের এই জাতীয় বীরদের রাষ্ট্রীয় সম্মান, সম্মানী ও সম্মাননা দেওয়া আমাদের পরম দায়িত্ব ও কর্তব্য।

নেতারা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের এতো সময় পরও ভাষা শহীদ ও ভাষা সৈনিকদের তালিকা প্রণয়ন না হওয়া এবং তাদেরকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ক্ষেপণ দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক। সবার মনে রাখা প্রয়োজন আমরা জাতীয় বীরদের যথাযথ সম্মান জানাতে ব্যর্থ হলে ইতিহাস আমাদের কাউকে ক্ষমা করবে না। এই ব্যার্থতার কারণে শাসকদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে একদিন।

বাংলাদেশ ন্যাপের এই দুই নেতা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মতো ‘ভাষা সৈনিক’দের ভাষা বীর হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়া এখন সময়ের দাবি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনই স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রথম সোপান। একইসঙ্গে সারা বছর শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষাসহ ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক স্থানগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্যও সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পাশাপাশি এই ভাষা সৈনিকদের রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভাতা চালু করা সময়ের দাবি। ৫২’র একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূচনা। একুশ আমাদের অহংকার, আমাদের প্রেরণা। এই অহংকারকে বিতর্কিত করার সব ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে।

নেতারা সারা বছর শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষাসহ ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক স্থানগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এবং ভাষা শহীদদের অবদানকে তুলে ধরতেই স্বীকৃতি প্রয়োজন।

এমএম/পিএইচ