‘বঙ্গবন্ধু আমাদের পতাকা, মানচিত্র ও স্বাধীনতার প্রতীক’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল একজন ব্যক্তি নন, তিনি একটি পতাকা, একটি মানচিত্র ও স্বাধীনতার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কোনো বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর সম্পদ নন। বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীন দেশ, স্বাধীনতার যুদ্ধ, ১৬ ডিসেম্বরের চূড়ান্ত বিজয়।
রোববার (৩ জানুয়ারি) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর অবদান’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের বাঙালির ইতিহাস হয় না। বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ না করলে আমরা পরাধীনতার শৃঙ্খল কখনোই ভাঙতে পারতাম না। বাঙালির অদম্য মুক্তির স্পৃহার ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ১৯৪৮-৫২ এর উত্তাল ভাষা আন্দোলন, '৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, বাঙালির মুক্তিসনদ ১৯৬৬ এর ৬ দফার আন্দোলন, ৬৯ এর গণবিস্ফোরণ, ১৯৭০ এর অবিস্মরণীয় নির্বাচনী জনরায়, প্রতিটি ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর মহাকাব্যিক বিস্ফোরণ আমরা পাই ১৯৭১ এর ৭ মার্চে বজ্রকণ্ঠের ঘোষণায়। বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখি শুধু মুক্তিযুদ্ধই নয়, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের প্রতিটি পর্যায়ের প্রেরণা ও শক্তির উৎস ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস তিনি পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকলেও তাঁর দৃপ্ত মুখমণ্ডল হৃদয়ে ধারণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মরণপন যুদ্ধ করেছেন। তার ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়েই মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছে।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, আমরা এখন যা উপলব্ধি করছি, তিনি তার সময়ে যথার্থভাবে তা উপলব্ধি করেছিলেন। দেশের প্রকৃতি, পরিবেশ সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ অভিযান শুরু করেছিলেন সফলভাবে। বর্তমানে দেশ পরিচালনায় রয়েছে জাতির পিতার আদর্শ ও রক্তের সুযোগ্য উত্তরাধিকার সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। দেশের প্রত্যেক তরুণকে যার যার অবস্থান থেকে বঙ্গবন্ধুর দেখানো নীতি, আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে হবে। প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সবুজ বাংলা গড়তে আমাদের প্রতিজ্ঞাবব্ধ হতে হবে। বনের অবৈধ দখলদারদের তালিকা করা হয়েছে সবাইকে উচ্ছেদ করে সেখানে বৃক্ষরোপণ করা হবে।
বিজ্ঞাপন
আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন সাধারণ অথচ অসাধারণ। জনগণের জন্য তার ছিল গভীর ভালোবাসা এবং দেশ পরিচালনায় ছিল সীমাহীন অন্তর্দৃষ্টি। তিনি বলেন, জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে দীক্ষামন্ত্র। অস্ত্র কম থাকলেও সবার কাছেই ছিল সবচাইতে বড়ো অস্ত্র 'জয় বাংলা' অস্ত্র। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের সময় কারাগারে থেকেও ছিলেন সবার সাথে, মুক্ত থাকলেই কেবল থাকতেন এক জায়গায়। স্বাধীনতার পর অত্যন্ত সফলতার সাথে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দেশে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে পাকিস্তান নামের এক অদ্ভুত ও অবাস্তব রাষ্ট্রকে সমাহিত করা হয়। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার মহানায়ক হলেও ছিলেন একজন রক্ত মাংসের মানুষ। দেশের জন্য তিনি ব্যক্তিগত জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। তার অবদান কখনোই ভোলা যাবে না। তার স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।
আলোচনায় আরও যুক্ত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার৷ অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ড. মো. বিল্লাল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মাহমুদ হাসান, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ) মো. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মিজানুল হক চৌধুরী, বনশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. ছালাহ উদ্দীন চৌধুরী, পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. হুমায়ুন কবির, বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরী, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. মাসুদুর রহমান, রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান প্রমুখ।
এইচএন/এনএফ