ঘোষিত বাজেট বিপজ্জনক, আয় বৈষম্যের সহায়ক বলে মনে করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দলটির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার ২০২১- ২০২২ এর বাজেটের ওপর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এ কথা বলেন। 

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরের 'জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ' শীর্ষক প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা হলেও কয়েক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং বৈষম্য নিরসনসহ বর্তমান দূঃসময়ের প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম হবে না। জিডিপির ১ শতাংশ বরাদ্দ দিয়ে বিরাজমান স্বাস্থ্য খাতের ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারবে না।

তারা বলেন, প্রজাতন্ত্রের পঞ্চাশতম বাজেটে সামাজিক বৈষম্য নিরসন করার কোনো পরিকল্পনার প্রতিফলন হয়নি, বরং এ বাজেট বৈষম্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। সরকারের উচ্চ প্রবৃদ্ধির প্রবণতা বাংলাদেশকে উচ্চ আয় বৈষম্যের দেশ এবং বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের দেশে রূপান্তর করেছে। বিপজ্জনক বৈষম্যের ধারা অব্যাহত থাকলে প্রজাতন্ত্র বড় ধরনের সংকটে আবর্তিত হবে।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, করোনার কারণে বহু কর্মজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে এবং কয়েক কোটি মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে নেমে গিয়েছে। বিশাল কর্মক্ষম যুবক, শ্রমজীবী মানুষের  কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাজেটে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি, এদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্থায়ী ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়নি। বরং অনুৎপাদনশীল ও অপ্রয়োজনীয় খাতে এবং দুর্নীতি বিস্তার সহায়ক প্রজেক্টগুলোতে বাজেটে বিপুল অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা করোনাকালীন মহামারিতে কোনক্রমেই জরুরি নয়।

তারা বলেন, সরকার এবারও রাজনৈতিক উদ্দেশে বড় বাজেটের গতানুগতিক ধারা অতিক্রম করতে পারেনি। অনুপার্জিত আয়ের সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠীই পুঁজি পাচারের প্রধান উৎস। যা সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হচ্ছে। জনগণের সম্পদ দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও অপচয়ের আত্মঘাতী দুষ্টচক্রে সরকার আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এবারের অর্থবছরের বাজেটে সরকারিভাবে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি।

নেতারা বলেন, কয়েক কোটি কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের কোন নির্দেশনা বাজেটে পরিলক্ষিত হয়নি এবং সব হতদরিদ্র মানুষকে দীর্ঘস্থায়ী সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার পরিকল্পনায়ও চরম ঘাটতি রয়েছে। সুতরাং সরকারকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে এসে আর্থ সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উপনিবেশিক প্রশাসনিক ব্যবস্থার সংস্কার ও পরিবর্তন, গণতন্ত্রায়ন ও সুশাসন এবং বৈষম্য দূরীকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

এইউএ/এসএম