খালেদা জিয়া/ ফাইল ছবি

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের হার্ট আর কিডনির সমস্যা এখনও আছে। এই দুই রোগ ছাড়া তার শারীরিক অবস্থা ভালো। এ দুটি রোগের উন্নত চিকিৎসা দেশের হাসপাতালে সম্ভব নয় বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। 

তারা বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়ার বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। সেগুলোর চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তার করোনা পরবর্তী কোনো জটিলতা নেই। তার অবস্থা ভালো। তবে তার পুরনো রোগ হার্ট আর কিডনি সমস্যা আগের মতোই আছে। সেগুলো চিকিৎসা এখানে সম্ভব নয়। বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সার্বিকভাবে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিন্তু তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকরা এখনও কিছু বলেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশনেত্রীর উন্নত চিকিৎসা দরকার। সেটা দীর্ঘদিন থেকে আমরা, তার পরিবার ও চিকিৎসকরা বলে আসছে। যেটা এখানে সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু সরকার তাকে সেই সুযোগ দিচ্ছে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে তো হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিলো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর একজন বয়স্ক মানুষ হিসেবে শরীরে যে স্বাভাবিক জটিলতাগুলো দেখা দিয়েছিল তার চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি পোস্ট কোভিড জটিলতা- অক্সিজেনের সমস্যা, ফুসফুসে পানি জমা সেগুলো থেকে মুক্ত। কিন্তু তার হার্ট আর কিডনি সমস্যা আগের মতোই আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকরা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, হাসপাতালে তার হার্ট আর কিডনি সমস্যার চিকিৎসা সম্ভব নয়। এগুলোর চিকিৎসা তার আগের হাসপাতালে (দেশের বাইরে) করাতে হবে। ফলে এখন যেকোনো দিন তিনি বাসা ফিরে যেতে পারেন।’

মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বলছেন, আজ খালেদা জিয়ার কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয়েছে। সেইগুলোর রিপোর্ট রাতের মধ্যে হাতে পাওয়া যাবে। আরও কয়েকটি পরীক্ষা করার দরকার আছে। সবগুলো রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসা বসে তাকে রিলিজ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এটা বলা যেতে পারে- তার বর্তমান যে শারীরিক অবস্থা তাতে তিনি চাইলে যেকোনো সময় বাসায় ফিরতে পারেন।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘যে দিন ম্যাডামকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে, সেদিনই আপনাদের ডেকে আলাদা করে ব্রিফ করা হবে। এখনই বলার সময় হয়নি তিনি কবে বাসায় ফিরবেন।’

গত ২৭ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ৩ মে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ একমাস পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে চলতি মাসের ৩ তারিখে তাকে সিসিইউ থেকে আবার কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে কেবিনেই তার চিকিৎসা চলছে।

এএইচআর/এসএসএইচ