আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতাদের যুদ্ধের জন্য কর্মীদের ডাক দেওয়ার মধ্য দিয়ে আবারও আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির আভাস দিচ্ছেন কি না তা এখন ভেবে দেখার বিষয়। যদি তাই হয় তাহলে এই আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জবাব দিতে জনগণ প্রস্তুত রয়েছে।

শুক্রবার (১১ জুন) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে তার সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার হটানোর নামে যে যুদ্ধংদেহী মনোভাব বিএনপি দেখাচ্ছে সেক্ষেত্রে জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সরকার কঠোরভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে। ক্ষমতায় যেতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা দলের কর্মীদের যুদ্ধের জন্য ডাক দিয়েছেন। তাদের এমন বক্তব্য একদিকে অগণতান্ত্রিক, অপরদিকে ফ্যাসিবাদী মানসিকতার পরিচয়। বিএনপিকে এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে সরে এসে গণতান্ত্রিক ভাষায় কথা বলার আহ্বান জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, নিজেরা গণতান্ত্রিক হোন এবং রাজনীতিতে ও দলের গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। গণতন্ত্র শুধু চাওয়ার বিষয় নয়, এটি চর্চারও বিষয়। সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ নির্বাচন।

বিএনপিকে আগামী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ যাদের নির্বাচিত করবে তারাই পরবর্তী সরকার গঠন করবে। বিএনপি একটি ব্যর্থ বিরোধী দল। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থতা এবং নেতৃত্বের হঠকারিতার জন্য কর্মীরা আজ হতাশাগ্রস্ত। গত একযুগ ধরে প্রাণান্ত চেষ্টা করেও কর্মীদের মাঠে নামাতে পারেনি বিএনপি।

তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মাথাপিছু ঋণের বোঝা দেখেন, রাষ্ট্রের উত্তরণ ও সমৃদ্ধির কিছু দেখতে পান না। তারা দেশের অর্থনীতিকে পরনির্ভরশীল করে রেখে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই দুর্নামের বৃত্ত থেকে দেশকে অমিত সম্ভাবনাময় রূপ দিয়েছেন, পরিচিত করেছেন উন্নয়ন ও অর্জনের রোল মডেল হিসেবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের অর্জনে ক্রমশ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে বিএনপি। তাইতো বিএনপি মহাসচিব শুধু ঋণই দেখতে পান কিন্তু মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলার দেখতে পান না। দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দেখতে পায় না বিএনপি।

তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের মুখে সদাসর্বদা মিথ্যাচার আর নেতিবাচকতা মানায় না, তাদের বক্তব্যে গভীর হতাশা ও দলীয় ব্যর্থতাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিএনপি দেশের কপালে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কলঙ্ক তিলক পরিয়েছিলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ ১১ জুন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায় তৎকালীন অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

তিনি বলেন, এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন মনোভাব নিয়েই জাতীয় রাজনীতিতে শেখ হাসিনার যাত্রা শুরু হয়। জনগণের মুক্তি আন্দোলনে শেখ হাসিনাকে সহ্য করতে হয়েছে অনেক জেল-জুলুম ও অত্যাচার নির্যাতন।

আওয়ামী লীগের এ শীর্ষ নেতা বলেন, শেখ হাসিনা অসংখ্যবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু জনগণের অকৃত্রিম ভালোবাসায় সব রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নিতে অকুতোভয় নির্ভীক সেনানীর মত নিরবচ্ছিন্ন ভাবে পথ চলেছেন। সব বাধা বিপত্তি জয় করে আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বমহিমায় উজ্জ্বল।

এইউএ/এসকেডি