ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক শ্রেণির কর্মকর্তা জামায়াত-হেফাজতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। বায়তুল মোকাররমে কারা সমাবেশ করে তা ভিডিও করে বিদেশে প্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও সমাবেশে তাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ইন্ধন রয়েছে। এমন দাবি করে অনতিবিলম্বে তাদের চিহ্নিত করার মাধ্যমে প্রত্যাহার বা চাকরিচ্যুতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ।

৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন, গণমুখী বাজেট দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে ও দুটি দাবি নিয়ে শুক্রবার (১১ জুন) জুমা শেষে কেন্দ্রীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সমাবেশের আয়োজন করে আওয়ামী ওলামা লীগ।

ওলামা লীগের কার্যকারী সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক কাজী মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি জেলা উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তারই আলোকে ৮ হাজার ৭শ ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ তৈরির পাশাপাশি ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করেন।

সাংগঠনিক হাফেজ মাওলানা আব্দুল জলিল বলেন, এই মসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে একদিকে যোগ্য ও খাঁটি আলেমদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে, অন্যদিকে ইসলামের সঠিক রূপরেখা জাতির মধ্যে প্রচার-প্রসার ঘটানো হবে। তারই ধারাবাহিকতায় নামাজ আদায় করার উপযোগী ৫০টি মডেল মসজিদ গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

শাইখ মাওলানা আলমগীর হোসাইন তার বক্তব্যে ২০২১-২২ সালের প্রস্তাবিত বাজেটকে গণমুখী বাজেট হিসেবে উল্লেখ করেন। কোনো ঘাটতি ও দুর্বলতা না থাকায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ওলামা লীগের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে বক্তারা বলেন, করোনার দুর্যোগে গত সাড়ে ১৫ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার আলো থেকে দেশ ও জাতি বঞ্চিত। এতে একদিকে শিক্ষার্থীরা মেধা শূন্য হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থনৈতিক সংকটে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে চাকরির বয়স পার হওয়া নিয়ে শঙ্কায় দিনাতিপাত করছে শিক্ষার্থীরা।

প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তারা বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে বিশাল মানসিক দুশ্চিন্তা। সন্তানরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ও ক্লাস-পরীক্ষা না থাকায় মোবাইল আর টিকটকের নেশায় লিপ্ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠান খোলার দাবি নিয়ে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। আমরা প্রজন্মকে মেধাশূন্য থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

ওলামা লীগের কার্যকারী সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুস সাত্তার বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক শ্রেণির কর্মকর্তা জামায়াত-হেফাজতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। তারা সরকারবিরোধী আন্দোলন ও সমাবেশকে ইন্ধন দিচ্ছে, সরকারকে বিব্রত করে এমন ভিডিও বিদেশে প্রচার করছে। অনতিবিলম্বে তাদের প্রত্যাহার অথবা চাকরিচ্যুত করতে হবে। না হয় ওলামা লীগ দেশ প্রেমিক তথা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের আলেম ওলামাদের নিয়ে কঠিন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

জেইউ/এসএসএইচ