বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়ে ভ্যাকসিন পাবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ। বৃহস্পতিবার (০৭ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

বিএনপির যুগ্মসচিব রিজভী আহমেদ বলেছেন, ভ্যাকসিন নিয়ে সরকার ধুম্রজাল সৃষ্টি করছে- এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি ভুল সংবাদের প্রেক্ষিতে ভ্যাকসিন নিয়ে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছিল। তার সমাধান স্বাস্থ্য সচিব ও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট করে দিয়েছেন। যারা এসব কথা বলে, তারা জনগণের মনে প্রথম থেকেই বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপি নেতারা এসব কথা বলছেন। বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়ে ভ্যাকসিন পাবে।

বিএনপি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বিক্ষোভ কর্মসূচি ডেকেছে- এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, জনগণের মনে যে প্রশ্ন ছিল- তারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে আদৌ কতটুকু বিশ্বাস করে, এই কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমে তারা সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। ১০ জানুয়ারি বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা না করে অন্যদিন করতে পারত। তারা ৯ জানুয়ারি বা ১১ জানুয়ারি করতে পারত।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি এ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা ১০ জানুয়ারি পূর্ণতা পেয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করলেও বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়নি। 

হাছান মাহমুদ বলেন, যেদিন আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে, সেদিন বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণার মানে তারা প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে যে বিশ্বাস করে না তারই বহিঃপ্রকাশ। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তাদের জোট সঙ্গী জামায়াতে ইসলামী আছে, যারা দলীয়ভাবে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল। তারা পাকিস্তানের পক্ষে লড়াই করেছিল। 

বিএনপি বৃহত্তর ঐক্য গত নির্বাচনের আগেও করেছিল। ডান, বাম, অতি বাম, অতি ডান, প্রতিক্রিয়াশীল ও ধর্মান্ধগোষ্ঠী সবাইকে নিয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা চেষ্টা করেছিলো সরকারের বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে। দেখা গেলো সেই ঐক্য কাঁচের গ্লাসের মতো ভেঙে গেছে। যে দলগুলো একত্রিত হয়েছিল- সেই দলগুলোর নিজেদের ভেতরেই ঐক্য নেই, বিএনপির ভিতরেও ঐক্য নেই, বলেন মন্ত্রী।  

তিনি বলেন, ‌আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাবো, অতীতেও তারা বৃহত্তর আন্দোলন করেছে। কিন্তু তাতে তারা ফল পাননি তাই নিজের দলের ঐক্যটাকে ধরে রাখার চেষ্টা করাই শ্রেয়। কারণ তাদের দলের মধ্যে দলের নেতারা যেভাবে বক্তব্য রাখছেন, একে অপরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করছেন। সামনের সারিতে বসা নিয়ে তারা মারামারি করেছেন, তাতে তাদের দলের যে অনৈক্য সেটা বেরিয়ে এসেছে। প্রথমে দলের ঐক্য তৈরি করা জরুরি।'

ওবায়দুল কাদেরের ভাই মির্জা আবদুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রথমতো মির্জা কাদের যে বক্তব্য রেখেছেন সেটির ব্যাখ্যা তিনি ইতোমধ্যে দিয়েছেন। তিনি নোয়াখালীর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন। সারা দেশের রাজনীতি নিয়ে তিনি কোন কথা বলেননি। তিনি বিবৃতি দিয়ে এটা জানিয়েছেন। 

হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দলের মধ্যে যে মত প্রকাশের গণতন্ত্র আছে, তার বক্তব্যতে সেটারই বহিঃপ্রকাশ হয়েছে বলে আমি মনে করি। এটি যে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, সেটার ব্যাখা তিনি দিয়েছেন। একইসাথে এটাও প্রকাশ পেয়েছে যে কেউ অভিমত ব্যক্ত করতে পারেন। এরকম অভিমত আমাদের দলের মধ্যে বহুজন বহু আগে ব্যক্ত করেছেন। তিনি যেহেতু আমাদের দলের সাধারণ সস্পাদকের ছোট ভাই, সেজন্য তারটা বেশি প্রচার হয়েছে। এটিই শুধু ভিন্নতা।

এসএইচআর/ওএফ