আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গণতন্ত্র ধ্বংস করার পাশাপাশি পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় আসার পর বড় বড় রাস্তার দুই পাশে যে পুরনো গাছগুলো ছিল সেগুলোর একটাও নাই। ঢাকার বাইরে গিয়ে দেখবেন, জেলা পরিষদের যত গাছ ছিল সব নিজেরা ভাগ-বাটোয়ারা করে কেটে নিয়ে গেছে। এখানে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আছেন, তিনি ভালো বলতে পারবেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে বেরাইদ এলাকায় বিএনপি মহানগর উত্তরের উদ্যোগে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি এ কর্মসূচির আওতায় সারা দেশে ৫ লাখ নিম গাছের চারা লাগাবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের ঠাকুগাঁও শহরে ঢুকতেই একটা সেগুন বাগান ছিল। একটা খালের পাশ দিয়ে পাকিস্তান আমলে অনেক সেগুনের গাছ লাগিয়েছিলেন একজন ডিএফও। আওয়ামী লীগ আসার পর থেকে এখন প্রায় সাফ করে ফেলেছে। সত্যিকথা বলতে কী, ওই জায়গাটা এখন দেখলে এতো খারাপ লাগে। আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে এদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ ধবংস করেছে। একই সঙ্গে রাজনীতির পরিবেশকেও ধ্বংস করছে। সত্যিকার অর্থে তারা মানুষকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।

মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশকে সুন্দর রাখতে হবে উল্লেখ করে ফখরুল আরও বলেন, সেজন্য অন্যতম প্রধান হচ্ছে গাছ। মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য এই বৃক্ষরোপণকে সামাজিক আন্দোলন মনে মানুষকে উদ্ভুব্ধ করতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সারাদেশে বৃক্ষরোপণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এরপর খালেদা জিয়ার শাসনামলে সর্বত্র সামাজিক বনায়নের কাজ শুরু হয়েছিল। সেজন্য আবারও নতুন করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সারাদেশে এই বৃক্ষায়নের কর্মসূচি শুরু করেছি। এটাকে আমরা একটা সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে চাই।
তুরাগ নদসহ বিভিন্ন নদী দখল

ঢাকার আশপাশের নদীগুলো ভরাট ও দখল করার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দায়ী করে মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আপনাদের তুরাগ নদী সব দখল হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন খবরের কাগজে আমরা দেখি। কারা দখল করছে? সমস্ত আওয়ামী লীগের নেতারা দখল করছে। সেখানে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করছে, কারা পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করছে? কারা ক্লাব তৈরি করছে? সব আওয়ামী লীগের লোকজন, এমপি। কারা সিমেন্ট কারখানা তৈরি করছে?

তিনি আরও বলেন, বালু নদী তাঁকিয়ে দেখবেন এখান থেকে সেই রূপগঞ্জ পর্যন্ত সব দখল করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রী-এমপিরা। এভাবে দখল করে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশে একটা বিরুপ প্রকৃতি তৈরি করেছে, যেটা নিয়ে আমাদের বেঁচে থাকা বড় কষ্টকর।

মহানগর উত্তরের সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এএফএম আবদুল আলীম নকির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সহ-সম্পাদক রওনাকুল ইসলাম টিপু, যুবদলের উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর মহানগর উত্তরের এজিএম শামসুল হক, তুহিরুল ইসলাম তুহিন, এবিএমএ আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।

এএইচআর/এসএম