বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদার সুচিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করা এবং তার মুক্তি দিতে আমরা সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।

মঙ্গলবার (২১ জনু) গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। গত শনিবার অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটি বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে, খালেদা জিয়া শুধু একজন বয়স্ক রাজনীতিবিদ নন, তিনি এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তার ভূমিকা কিংবদন্তীর মতো। তিন বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। দেশে সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। তার পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা প্রয়োজন। সব প্রকার রাজনৈতিক সংকীর্ণতা থেকে বের হয়ে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা এ দেশের মানুষের প্রাণের দাবি।

খালেদা জিয়ার চিকিৎকদের উদ্ধৃত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া ৫৩ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে করোনাভাইরাস মুক্ত হলেও কোভিড পরবর্তী কয়েকটি জটিলতায় ভুগছেন এবং তিনি কোনো মতেই ঝুঁকিমুক্ত নন।

খালেদা জিয়ার হৃদরোগের সমস্যা আছে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তার কিডনি এবং লিভারের সমস্যা বেশ জটিল। তিনি দীর্ঘ দিন কারাগারে থাকার কারণে কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় হার্ট, লিভার ও কিডনির সমস্যা বেশ জটিল হয়ে উঠে।

খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকাকালে দুইবার ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিল বলে দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলেও হাসপাতালে দীর্ঘদিন অবস্থানকালে সেই ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ আবারও হতে পারে বলে চিকিৎসকরা মনে করেন।

অন্যদিকে হাসপাতালে নন কোভিড এরিয়ায় কয়েকজন নার্স এবং চিকিৎসক ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রাখা সমিচীন মনে করেননি। সেই কারণে বাসায় চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের আয়োজন সম্পূর্ণ করে বাসায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকরা বলেছেন- খালেদা জিয়ার লিভার ও অন্যান্য জটিলতার চিকিৎসা বিদেশে কোনো উন্নত কেন্দ্রে করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে যার সুযোগ তুলনামূলক ভাবে কম।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি দলের পক্ষ থেকে আগে বলা হয়নি কেন জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আগে বলিনি, তার পরিবার বিদেশে পাঠানোর কথা বলেছিল। আমরা এবার পার্টির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রেজ্যুলেশন নিচ্ছি যে, তার বিদেশে চিকিৎসা দরকার। এজন্য যা কিছু করা দরকার সরকারের করা উচিত ইমিডিয়েটলি। তারপর যে স্টেপগুলো আছে পরে আলাপ-আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

এএইচআর/এসএম