সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একা নন। এদেশের ১৬ কোটি গণতন্ত্রকামী মানুষ তার সঙ্গে আছেন। সুতরাং কোনও মিথ্যা মামলা ও হুলিয়া দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাব এর সামনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগের এত ভয় কেন? ভয়ের একটাই কারণ, তিনি এদেশের মানুষের রাজনৈতিক পতাকা তুলে ধরেছেন। যে পতাকা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিয়ে এসেছিলেন। যে পতাকা নিয়ে এসেছিলেন খালেদা জিয়া গণতন্ত্র রক্ষার মধ্য দিয়ে। আজ সেজন্যই তারেক রহমানকে তাদের এত ভয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে কর্মসূচিতে যোগ দিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মি‌ছিল নিয়ে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও বাড়ে। 

বিএনপির ‘মানবন্ধন বা প্রতিবাদ সমাবেশে’র কর্মসূচিকে ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।

আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিচার বিভাগের কোনও মর্যাদা আপনারা রাখেননি। তারেক রহমান একটি মামলায় পুরোপুরি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় খালাস দেওয়া হয়েছিল। পরে সেই মামলাকে আপনারা হাইকোর্ট দিয়ে আবার সাজার ব্যবস্থা করেছেন। খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।

দেশে কোনও আইনের শাসন নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার চুরি-লুটপাটের মাধ্যমে একটি ডাকাতির শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। কোভিড-১৯-এর মতো ভয়াবহ মহামারিতে তারা লুটপাট বন্ধ করেননি। উল্টো নতুন করে ভ্যাকসিন আমদানির মাধ্যমে লুটপাটের ব্যবস্থা করেছে। যেখানে ভারত ভ্যাকসিন বিক্রি করছে ২ টাকা ৪০ পয়সা করে সেখানে আমাদের সরকার বিক্রি করছে ৫ টাকা করে। এই চুরির টাকা সব তারা নিয়ে যাবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ দেওয়া ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি নতুন কোনও ঘটনা নয়। গত ১২ বছর ধরে তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া ও খালেদা জিয়াসহ সব গণতন্ত্রকামী মানুষদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার গভীর ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে তারা। সে চক্রান্তের ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া গৃহবন্দি হয়ে আছেন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে।

দেশের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে গত ১২ বছর এখানে একটি অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করছে, অত্যাচার-নির্যাতন ও মামলার দিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে দমন করে রাখা যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রামী, যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সংগ্রাম করে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে গণতন্ত্রকে অর্জন করেছে। এবারও তাদের বুকের রক্ত দিয়ে এই গণতন্ত্র রক্ষা করবে।

আওয়ামী লীগ জণগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে। এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। দেশপ্রেমী ও গণতন্ত্রকামী মানুষদের সঙ্গে নিয়ে এদের পরাজিত করতে হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

এএইচআর/ওএফ