বিএনপি কঠিন সময় পার করছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফাইল ছবি
বিএনপি কঠিন সময় পার করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, একদিকে করোনা আক্রমণ করছে। অন্যদিকে ফ্যাসিবাদী সরকার রাষ্ট্র ও জাতিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে। একে প্রতিরোধ করে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে বিএনপির উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সাড়ে ৬ ঘন্টার এ আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য রাখেন। সারাদেশের মহানগর ও জেলা কার্যালয় থেকেও নেতা-কর্মীরা এই ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ আমরা একটা অত্যন্ত প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে আছি। বিরূপ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ আমাদেরকে জিয়াউর রহমান দেখিয়েছেন। আজ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন- এটা আমাদেরকে সেই দিক নির্দেশ করে, যেই দিক নির্দেশের মধ্য দিয়ে আমরা গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে সক্ষম হব। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হব এবং আমরা সত্যিকার অর্থেই একটি সুখী, সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, মানুষের বাংলাদেশ, আলোকিত বাংলাদেশ নির্মাণ করতে সক্ষম হব।
বিজ্ঞাপন
জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ‘উজ্জ্বল নক্ষত্র’ অভিহিত করে তার অনুসৃত পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন মির্জা ফখরুল। তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান আমাদের সামনে সবসময় উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো থাকবেন। সেই নক্ষত্রকে লক্ষ্য করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হব।
আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে ক্ষমতা আছে বলে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা আজকে ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে আর ইতিহাসকে বিকৃত করছে। কেননা যদি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস আজকে প্রজন্ম জানে, দেশের ৫০ বছরে ইতিহাস যদি জানে, তাহলে আওয়ামী লীগের মুখ কোথাও থাকবে না।
বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপিকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের যে আদর্শ তাকে সামনে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। জিয়াউর রহমানের জন্মদিন তখনই সফল হবে যদি আমরা তার অনুসৃত পথে এগিয়ে যেতে পারি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ যে কথা বলতে পারছে, রাজনীতি করতে পারছে- সেটা জিয়াউর রহমানের অবদান। অথচ তারা অকৃতজ্ঞের মতো জিয়াউর রহমানের অবদান অস্বীকার করে। তারা তার মুক্তিযুদ্ধের পদক ছিনিয়ে নিতে চায়। আরে মুক্তিযুদ্ধ যে তিনি করেছেন এটা তো প্রতিষ্ঠিত সত্য। সেই পদক কীভাবে আপনারা ছিনিয়ে নেবেন, কীভাবে আপনারা মুক্তিযুদ্ধের সেই ইতিহাসকে মানুষের মন থেকে ভুলিয়ে দেবেন?
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জিয়াউর রহমান আমাদের দৃশ্যের আড়ালে হলেও মনের আড়ালে নয়। দেশ-বিদেশে গণতন্ত্রমনা মানুষ তাকে স্মরণ করে। তরুণরা শ্লোগান দেয়, জিয়া তোমায় মনে পড়ে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বরিশাল মহানগরের মজিবুর রহমান সারোয়ার, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের হাবিব উন নবী খান সোহেল, উত্তরের মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, চট্টগ্রাম মহানগরের আবুল হাশেম বক্কর, উত্তরের গোলাম আকবর খন্দকার, সিলেট মহানগরের নাসিম হোসাইন, কুমিল্লা মহানগরের হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াসীন, রাজশাহী মহানগরের মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, যশোরের অধ্যাপক নার্গিস বেগম, লালমনিরহাটের আসাদুল হাবিব দুলু বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া আলোচনায় বক্তব্য দেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুব দলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নিরব, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন ও ছাত্র দলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন।
এএইচআর/এইচকে