নির্বাচন এখন কতিপয় জটিল অসুখে আক্রান্ত, তাকে বাঁচাতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করতে হবে- নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদারের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তিনি (মাহবুব তালুকদার) একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি নিজেই জটিল ও কঠিন মানসিক রোগে আক্রান্ত।

সোমবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে মোহাম্মদপুর থানার ১৯ নং ওয়ার্ডের পাঁচটি ইউনিটের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অবাক লাগে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের কমিশনার মাহবুব তালুকদার একটি দলের হয়ে যেভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তাতে মনে হয় ইসি নয়, তিনি নিজেই জটিল ও কঠিন মানসিক রোগে আক্রান্ত। বর্তমান ইসির মূল সমস্যাই হচ্ছেন তিনি নিজেই।

এ সময় বিএনপি মাহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই আন্দোলনের ডাক দেন বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। 

তিনি বলেন, অথচ বিএনপি আমাদের চেয়ে ছয় ঘণ্টা পিছিয়ে আছে। কারণ আমাদের নেত্রী ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠেন। আর দুপুর ১২টার আগে বিএনপির কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সন্ধ্যা সময় নয়, গভীর রাতে বিবৃতি দেয়। এরা অন্ধকারের পার্টি। অন্ধকারে কাজ করতে তাদের ভালো লাগে।

কাদের বলেন, একে একে নেতারা দল ছেড়ে যাচ্ছে। তাদের ২০ দলীয় জোটেও দেখা দিয়েছে ভাঙনের বিষাদ সুর। কাজেই বিএনপি নিজেরাই বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। এখন শুনছি কেন্দ্রীয় সম্মেলন না করে ঘরে বসেই কমিটি করবে। সম্মেলন নেই দলটির। নিজেদের ঘরেই গণতন্ত্র নেই। তারা দেশে গণতন্ত্র কী করে করবে?

বিএনপির নিজের দলে এখন বিচ্ছেদের সানাই বাজছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কতগুলো অভিযোগ আসে। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যূ, চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী এ ধরনের বিতর্কিত, অপকর্মকারীদের দলে আপনারা ঠাঁই দেবেন না। নিজের লোক বাড়ানোর জন্য খারাপ লোকদের টেনে আনবেন না। খারাপ লোকেরা বসন্তের কোকিল। ভালো মানুষ যত আওয়ামী লীগে আসবে আমরা তত শক্তিশালী হব।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দলে যদি কিছু খারাপ লোক থাকে, এগুলোকে বাদ দিয়ে দেন। এখানে ত্যাগী কর্মীর অভাব নেই। দরকার নেই খারাপ লোকের। খারাপ লোকদের বাদ দিয়ে, ভালো মানুষদের নিয়ে আমরা দল করব। সেই আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে।

দলের প্রতিটি ইউনিটের নেতাকর্মীদের গণসংযোগ করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্মেলন হলে আমাদের দলের ভেতরের অন্তঃকলহ অনেকটা মিটে যাবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আপনারা যদি নেতা নির্বাচিত করেন তাহলে দলের অভ্যন্তরে রেষারেষি, কোন্দল তৃণমূলেই থেমে যাবে। এটা আর নতুন করে সমস্যার কারণ হবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা জনমতের একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন। যা মহানগরের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জমা দেবেন। সেখানে আওয়ামী লীগের অবস্থা কি? শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের আস্থা কতটা? তার কর্মসূচিতে মানুষ কতটা খুশি। অথবা কেউ যদি অসন্তোষ প্রকাশ করে সেটাও উল্লেখ করবেন। এটা করলে দল অনেক উপকৃত হবে।

প্রতিটি ঘরে আওয়ামী লীগের কী অবস্থা তারি হিসেব করার নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।‌

১৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সলিম উল্লাহ সলুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, সহ-সভাপতি সাদেক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা প্রমুখ।

এইউএ/জেডএস