সারাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের টার্গেট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, সঠিকভাবে অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা-মন্দির ভাঙচুর ও লটুপাটের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত। কিন্তু তাদের সামনে না এনে যারা নিরিহ-শান্তিপ্রিয় তাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

সোমবার (২৫ অক্টোবর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন তিনি। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মন্দিরে হামলার ঘটনাস্থল বিএনপির প্রতিনিধি দল পরিদর্শন শেষে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

তিনি বলেন, এসব ঘটনায় সরকার একটা উদ্যোগ নিয়েছে, তা হলো অনেকগুলো মামলা দেওয়া। আসলে হামলাকারীদের বিচার করার কোনো উদ্যোগ সরকারের নেই। তাদের উদ্যোগ হচ্ছে এ সুযোগে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-হয়রানি করার একটা নীলনকশা আঁকা। এ অবস্থায় সুস্পষ্টভাবে বলা যায়, সরকার পরিকল্পিতভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের হেনস্থা করার সুযোগ নিচ্ছে।

সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে দাবি করে গয়েশ্বর আরও বলেন, আওয়ামী লীগ তার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে এ ষড়যন্ত্র করেছে। স্পর্শকাতর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মধ্য দিয়ে জনদৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ও ক্ষমতা দীর্ঘ করার হীন চেষ্টায় লিপ্ত সরকার। অসাম্প্রদায়িক চিন্তা লালন করে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে আমাদের।

দেশের বিভিন্ন মন্দিরে হামলার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে, এমন অভিযোগ করে গয়েশ্বর বলেন, আমি রংপুরে গিয়েছিলাম। সেখানে হিন্দুরা বলেছে- হামলার পর পুলিশ এসেছে। কুমিল্লার একটি মন্দিরে তিনবার আক্রমণ হয়েছে। প্রতিবারই পুলিশ আক্রমণের পর এসেছে। মন্দিরে আগুন, ভাঙচুরের ঘটনায় এখনো আতঙ্ক কাটেনি। প্রশাসন গুরুত্ব না দেওয়ায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতকারীরা। এখনো বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর হচ্ছে।

‘বাংলাদেশের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির ভোট বাড়বে’ -পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা (বিজেপি নেতা) শুভেন্দু অধিকারীর এমন বক্তব্য সাম্প্রদায়িক এবং মৌলবাদের পরিচয় বলেও মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।

সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বরতক উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

এএইচআর/এসএম