জনগণ রাজনৈতিক দলকে বিশ্বাস করে না
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেছেন, আমরা জনগণকে কথা দিয়ে কথা রাখি না, এই কারণে জনগণ এখন কোনো রাজনৈতিক দলকে বিশ্বাস করে না। জাতিকে বাঁচানো দরকার। তার জন্যই জাতীয় সরকার প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। মানুষ গণতন্ত্রের সরকার, আমাদের সরকার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার চায়। অগণতান্ত্রিক সরকার মানুষ এখন আর চায় না। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের পতন ঘটিয়ে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জেএসডি আয়োজিত বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে গণফোরামের (একাংশ) সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনার প্রতি সম্মতি জানাচ্ছি। সাধারণ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একমত পোষণ করতে হবে। কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলে এই অগণতান্ত্রিক সরকারকে বিদায় করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ১৯৭২ সালে সবাইকে নিয়ে একটা সরকার তৈরির দাবি উঠেছিল, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তা নাকচ করে দিয়েছিল। মানুষের স্বপ্ন তখনই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছিল। ১৯৭০ সালের সংবিধান তৈরির পথে যে মতামত দেওয়া হয়েছিল সে পথে তারা হাঁটেননি বলেই সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত ৫০ বছর ধরে করে আসছি। আমরা যখন সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি তখন জনগণের নিজের ভোটের সাধারণ অধিকারটুকু নেই। বাস্তবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিকভাবে মৃত্যু হয়েছে, তাদের নৈতিকতার মৃত্যু হয়েছে। মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে সেই সিদ্ধান্তকে সরকার ভয় পাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এক সময় সাধারণ জনগণের রাজনৈতিক দল ছিল। আর এখন লুটেরা দুর্নীতিবাজের দলে পরিণত হয়েছে। সরকারের মধ্যে এখন ভয় ধরেছে। এখন গণ ঐক্য, গণ আন্দোলন ও গণজোয়ার হলেই তাকে তাদেরকে তাড়ানো সম্ভব।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, রাষ্ট্র কীভাবে চলবে তার জন্য নতুন করে আইন ও নিয়ম কানুন দরকার। ৫০ বছর যেভাবে চলছে এভাবে আর চলতে দেওয়া যাচ্ছে না। জমিদারি বানানোর নিয়ম এই সংবিধানে আছে। ক্ষমতার মধ্যে আছে জমিদারতন্ত্র। ১৯৭২ সালে যে সংবিধান তৈরি হয়েছে তা ক্ষমতাসীনদের হাতে আছে, ক্ষমতাসীনদের কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য নয়, আমরা এমন সরকার চাই যে সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে ও বিশ্ববাসীর আস্থা অর্জন করবে।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার অর্থাৎ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যদি কোনো আইন তৈরি করে, তা ওই নুরুল হুদার মতো লোক নির্বাচন কমিশনে রাখার জন্যে আইন করবে। বাংলাদেশের আইনে একজন ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রকাশ করে। আপনারা রাজনীতিকে রক্তপাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন, আন্তর্জাতিকভাবে সেটা হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতা রক্ষার জন্য পরিস্থিতিকে কীভাবে তৈরি করছেন, আমরা বুঝতে পেরেছি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, জেএসডির কার্যকারী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, জেএসডির কার্যকারী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।
এমএইচএন/ওএফ