১ নভেম্বর থেকে শুরু হ‌ওয়া বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রযুক্তি সম্মেলন ওয়েব সামিট ২০২২-এর এই পর্বে ৭১ হাজারেরও বেশি অংশগ্রহণকারী অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। সেই সঙ্গে প্রায় ১ হাজার ১শ বক্তা এবং নতুন উদ্যোক্তা স্ট্যার্টআপের ২ হাজার ৬শ ছাড়িয়ে গেছে, যা এ যাবতকালে ওয়েব সামিটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

প্রযুক্তির কোনো খাত বাইরে ছিল না এই সম্মেলনে, একই সঙ্গে পৃথিবীর শীর্ষ কোম্পানি থেকে শুরু করে ছোট ছোট কোম্পানিগুলো বিভিন্ন প্যাভিলিয়নে তাদের প্রযুক্তির পসরা বসিয়েছিল। শ্রেণিবদ্ধ স্টলে উদ্যোক্তারা তাদের প্রযুক্তির নতুন উদ্ভাবনী বিষয়গুলোকে দর্শনার্থীদের মধ্যে তুলে ধরেন। গুগলের মতো শক্তিশালী কোম্পানির পাশেই ছিল এ বছর চালু হওয়া নতুন স্টার্টআপগুলো।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্ভাবনী শক্তি তৈরি করা একইসঙ্গে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাসহ নতুন চ্যালেঞ্জ ক্রিপ্টো অর্থনীতির বিষয়গুলো অর্থাৎ ব্লগ চেইন এবং ক্রিপ্টো কারেন্সি গুলির গুরুত্ব ও এর প্রতারণার বিষয়গুলো  ওয়েব সামিটের প্রধান কর্মকর্তা পেডি কসগ্ৰাব এই সামিটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য বলে বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতায় তুলে ধরেছেন।

নতুন স্ট্যার্টআপগুলোতে এমন অনেক বিষয় ছিল যা মানুষের জীবনকে অনেক বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, জাতিসংঘের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী প্রতি সাত জনের মধ্যে একজন তরুণ কোনো না কোনো ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এমন পরিস্থিতিতে হেড স্পেস নামক এমন একটি অ্যাপ রয়েছে যার মাধ্যমে এই মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করা যেতে পারে। গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ ক্রাইসিস রোধে প্রযুক্তির ভূমিকা শীর্ষক এক আলোচনায় বিষয়টি উঠে আসে।

জীবনের প্রাত্যহিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি ব্যবহার সহকারে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও সরল এবং আধুনিক উপায়ে কম সময়ে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে নতুন নতুন উদ্ভাবনী স্টার্টআপ দর্শনার্থীদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। একই সঙ্গে প্রযুক্তির শীর্ষ ব্যক্তিদের বক্তব্য এবং গুগল, অ্যামাজন, অ্যাপলের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তির আগাম ঘোষণাও ছিল এই সামিটে।

৪ নভেম্বর সমাপনী সামিটের শেষ প্রহরে হাজির হয়েছিলেন পর্তুগালের রাষ্ট্রপতি মার্সেলো রেবেলো দে সজা। তিনি এসেই ২০২৩ সালের সামিটকে স্বাগত জানান। একই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী ২০২৮ সালের পরও যেন পর্তুগালে এই সামিট বজায় থাকে। তাছাড়া তিনি যোগ করেন, বর্তমানে গোটা বিশ্ব যেখানে মূল্যস্ফীতিতে ভুগছে, একই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী যে অশান্তি বিরাজ করছে তার সমাধানে লক্ষ্যে এই প্রযুক্তি সম্প্রদায়কে  এগিয়ে আসতে হবে।

শুধু একটি সভা নয়, একটি সেন্টার স্টেজ এবং পাঁচটি প্যাভিলিয়নে এরকম হাজারটি সভা-সমাবেশ, আলোচনা এবং অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান করে ইতি টানল ২০২২ সালের ওয়েব সামিট। বৈশ্বিক পরিস্থিতির অস্বাভাবিক কোনো অঘটন না ঘটলে যথারীতি আগামী বছর ২০২৩ একই স্থানে আবারও বিশ্ব প্রযুক্তির সর্ববৃহৎ এই সম্মেলন আরও বড় পরিসরে বসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আয়োজকরা।

এসএসএইচ