সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাইয়ে বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক তরিক্বতভিত্তিক আধ্যাত্মিক সংগঠন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত শাখাগুলোর উদ্যোগে এশায়াত মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) ও খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসুল (দ.), হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র সালানা ওরছ মোবারক এবং ফাতেমায়ে ছানি, জামানার রাবেয়া বসরী রূহানি আম্মাজান ছাহেবার ফাতেহা শরীফ উপলক্ষ্যে এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতি বছরের মতো এবারও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ ভারত, পাকিস্তান, স্থানীয় আরবি ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে। দুবাই আল-কুজ ডাসকু ক্লাবে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। মাহফিল রূপ নেয় জনসমুদ্রে।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) স্থানীয় দুবাই আল মারাবিয়া স্ট্রিট, ডাসকু ক্লাবে অনুষ্ঠিত এ মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন দুবাই কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব হারুন এম. আজাদ।

মাওলানা মুহাম্মদ হাসানের কণ্ঠে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এশায়াত মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আল আইন শাখার সভাপতি আলহাজ মুহাম্মদ নুরুল আলম। আরও বক্তব্য রাখেন কমিটির সংযুক্ত আরব আমিরাত এশায়াত উপ-পরিষদের আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ জাফর ও সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

বক্তারা বলেন, মানুষকে হেদায়ত দানের জন্য আল্লাহ পাক প্রিয় রাসুল (দ.) কে মানব রূপে মানব জাতির কাছে পাঠিয়ে অত্যন্ত দয়া ও অনুগ্রহ করেছেন। তিনি কোরআনের নূর তথা ফয়েজে কোরআন দিয়ে উম্মতদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করতেন। উনার উত্তরসূরি হিসেবে দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা খলিফায়ে রাসূল হজরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কোরআনের নূর তথা ফয়েজে কোরআনের মাধ্যমে মানুষের অন্তরকরণকে পবিত্র করে ছৈয়্যদুল মুরসালিন নবী করিম (দ.) এর মুহাব্বত সৃষ্টি করে দেন।

প্রিয় নবীজীর রেখে যাওয়া সুন্নাত পালনে যুবসমাজের মাঝে অনীহা চলে এসেছে। এর একমাত্র কারণ ইসলামের সঠিক জ্ঞান চর্চার বিমুখিতা।

বক্তারা আরও বলেন, জ্ঞান দুই প্রকার- কিতাবের জ্ঞান ও ক্বলবের জ্ঞান তথা আধ্যাত্মিক জ্ঞান। কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ হলো আধ্যাত্মিক জ্ঞান তথা ক্বলবী জ্ঞানের পাঠশালা, যা বর্তমান বিশ্বে বিরল।

নবীজির নূর ও ফয়েজে কুরআনসহ আধ্যাত্মিকতার নিয়ামত মানুষ যাতে সব যুগে গ্রহণ করতে পারে সেজন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন সর্বযুগে প্রযোজ্য কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের তরিক্বত। এই তরিক্বতের জন্য নিজের সর্বস্ব বিসর্জন দিয়েছেন। কাগতিয়ার নিভৃত পল্লিতে বসে দোয়া করতেন- হে আল্লাহ আমার তরিক্বতকে আরব থেকে আজমে জ্বীন থেকে ইনসানের মাঝে পৌঁছে দাও। মাশাআল্লাহ হজরত গাউছুল আজম (রাঃ) এর দোয়া আজ বাস্তব। এই মহান তরিক্বত প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্য সবদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই তরিক্বতের অমূল্য সুধা আহরণ করে মানুষ পশুত্বকে অবদমিত করে মনুষ্যত্বকে ধারণ করছে। শান্তিময় পৃথিবী গড়ার ক্ষেত্রে এসমস্ত মানুষেরাই যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে।

প্রতি বছর ধর্মীয় এই বৃহৎ জমায়েতের মাধ্যমে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের ইমেজ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন উপস্থিত আমিরাতের কমিউনিটি নেতারা।

আমিরাতে অনুষ্ঠিত এ মাহফিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সালতানাত অব ওমান শাখাগুলোর তরিক্বতপন্থিরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

মাহফিল শেষে দেশ, জাতি, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, অগ্রগতি ও উপস্থিত সবার ইহকালীন কল্যাণ, পরকালীন মুক্তি এবং কাগতিয়ার গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করা হয়।

/এসএসএইচ/