করোনায় সেবা দিতে কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা

কানাডায় দুজনের শরীরে নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যেটি অনেকটাই যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন স্ট্রেইনের মতো।

দেশটির অন্টারিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দারহাম এলাকার এক দম্পতির শরীরে করোনার ইউকে (যুক্তরাজ্য) ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দুজনকেই বিষয়টি অবহিত করে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এটিই কানাডায় ইউকে ভ্যারিয়েন্ট করোনা সংক্রমণের প্রথম ঘটনা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুজনের কেউই কোথাও ভ্রমণ করেননি কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে যাননি। অন্টারিওর অ্যাসোসিয়েট চিফ মেডিক্যাল অফিসার বারবারা ইয়াফি নাগরিকদের যতটা সম্ভব ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্য থেকে আসা সব ধরনের ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কানাডা।

অন্যদিকে, কানাডার স্বাস্থ্যখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল পাবলিক হেলথ এজেন্সি শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,
যুক্তরাজ্যে চিহ্নিত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (ইউকে ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে পরিচিত) ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারবে না। এমনকি এটি মারাত্মক কোনো অসুস্থতাও সৃষ্টি করতে পারবে না।

দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে চিহ্নিত নতুন প্রকৃতির কোভিড অধিকতর সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। তবে প্রাথমিকভাবে এমন ধারণা পাওয়া গেলেও এটি যে গুরুতর অসুস্থতা তৈরি করে কিংবা মানবদেহের অ্যান্টিবডির সক্ষমতা বা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতায় কোনো ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে- এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রমাণ নেই। এটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও গবেষণা দরকার। কানাডাসহ বিশ্বের গবেষক, চিকিৎসক বিজ্ঞানীরা কোভিডের এই মিউটেশন সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করছেন।

হেলথ কানাডা বলেছে, কানডার ন্যাশনাল মাইক্রোবায়োলোজি ল্যাবরেটরি প্রভিন্স এবং টেরিটরিগুলোতে নিশ্চিত হওয়া কোভিডের প্রতিটি ব্যক্তির তথ্য উপাত্ত নিয়মিত নিরীক্ষা এবং পর্যালোচনা করছে। এই নিরীক্ষার মাধ্যমেই করোনার নতুন ধরনে আক্রান্ত দুজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, চলমান নিরীক্ষা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে এই ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত আরও ব্যক্তি এবং নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট থেকে থাকলে তা চিহ্নিত করা যাবে।

হেলথ কানাডা বলছে, অন্টারিওতে শনাক্ত হওয়া দুজনের কেউই কানাডার বাইরে ভ্রমণ করেননি। কাজেই নাগরিকদের প্রচলিত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলা আবশ্যক।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, কানাডায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হওয়া সব করোনা রোগীর মাত্র দুই শতাংশ ভ্রমণজনিত কারণে সংক্রমিত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, কানাডায় বিভিন্ন প্রদেশে ক্রমবর্ধমান হারে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যদিও সরকার কঠোরভাবে করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কানাডায় সরকারের দিকনির্দেশনার পাশাপাশি প্রতিরোধমূলক কর্মসূচিতে নাগরিকদের ভ্যাকসিন দেওয়াও শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ১৯ জন। ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে করেছেন ১৪ হাজার ৯৬৩ জনের এবং সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৫৭ হাজার ১৯২ জন।

এফআর