করোনা : ইফতার ঘিরে পরিচিত সেই চিত্র নেই লিসবনে
রমজান মানেই মুসলিমদের কাছে ভিন্ন এক আমেজ। সেহরি, ইফতার, তারাবি ঘিরে এই রমজান মাসে বদলে যায় গোটা মুসলিম সমাজের জীবনধারা। তবে এবার করোনার থাবায় রমজানে দৃশ্যপট ভিন্ন।
পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশিদেরও রোজা কাটছে ভিন্ন এক আবহে। রোজা নিয়ে প্রবাসী এই বাঙালিদের উৎসাহের কোনো কমতি না থাকলেও রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা।
বিজ্ঞাপন
রুয়া দো বেনফরমোসো পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত মারতিম মুনিজ এলাকার অন্তর্গত একটি রাস্তা; যেখানে সারি সারি বাংলাদেশি খাদ্যপণ্য সামগ্রীর দোকান এবং বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
অন্যান্য বছর প্রবাসী বাংলাদেশিরা রমজানের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাদ্যপণ্য এবং বাহারি ইফতারি কেনার জন্য দুপুরের পর থেকেই রাস্তাটিতে ভিড় করতে শুরু করেন। ফলে এক মিলনমেলায় পরিণত হতো। কুশলাদি বিনিময়ের পাশাপাশি একে অন্যের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন আলোচনা ও পরামর্শ চলতো। কিন্তু মহামারির কারণে পরিস্থিতি ভিন্ন আকার ধারণ করেছে। ইফতার আয়োজন ঘিরে এবার লোকসমাগম নেই বললেই চলে।
বিজ্ঞাপন
ইফতারসামগ্রী বিক্রেতারা ঢাকা পোস্টকে বলেন, রমজান মাসকে কেন্দ্র করে সবসময়ই একটি প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। কিন্তু বিক্রি এ বছর পুরোপুরি বদলে গেছে। যেকোনো স্বাভাবিক মাসের তুলনায় বিক্রি অনেক কম।
রেস্তোরাঁগুলোর পরিস্থিতি আরও খারাপ। করোনার বিস্তার ঠেকাতে দেশটিতে একবছর ধরে নানা নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল; যার আওতায় বন্ধ ছিল রেস্তোরাঁগুলো। অনেকের আশা ছিল লকডাউন তুলে নেওয়ার কারণে এবার অন্যান্য বছরগুলোর মতো ইফতার বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিক্রির হার খুবই কম। অনেক মালিক লোকসান নিয়েই সাজিয়ে বসছেন ইফতারের পসরা।
এ অঞ্চলে দুটি মসজিদ রয়েছে। এ মসজিদগুলোতে প্রতিবছর ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষের ইফতারের আয়োজন করা হতো এবং খতমে তারাবির আয়োজনও থাকতো। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ইফতার আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। তবে স্বল্পসংখ্যক উপস্থিতি তারাবির নামাজ পড়া হচ্ছে।
এদিকে অনেকেই জানিয়েছেন তাদের চাকরি নেই। সরকারি কিছু সুবিধা পাচ্ছেন। দেশে পরিবারের বাকি সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে সেই অর্থ তারা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তবে এতেও তাদের রমজান নিয়ে উৎসাহের কোনো ঘাটতি পড়েনি।
এনএফ