দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হেনস্তা করার প্রতিবাদ ও নিশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ইউরোপ প্রবাসী সাংবাদিকরা। 

প্রবাসী সাংবাদিকরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, একজন সাংবাদিকের গলা চেপে ধরার সাহস কোথায় পেল, এ প্রশ্নের জবাব কে দেবে। দেশের উন্নয়ন, অবকাঠামো তুলে ধরতে সাংবাদিকরা যে ভূমিকা পালন করছেন তা সরকার কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না।

তারা বলেন, দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করা হলে সরকারের জন্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে সুবিধা হওয়ার কথা। যেখানে প্রধানমন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিকে জিরে টলারেন্সের ঘোষণা দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সরকার থেকে বাহবা পাওয়ার কথা, তা না করে তাকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রাখা হয়।

ইতালি থেকে অ্যাডভোকেট আনিসুজ্জামান আনিচ বলেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা গণতান্ত্রিক দেশে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি দেশের ও গণতন্ত্রের জন্য অশুভ সংকেত। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি দেশের স্বার্থে গণমাধ্যমে তুলে ধরা অপরাধ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাছে। আমলাতান্ত্রিক অপক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এ ঘটনায়। আমরা এ হামলা ও নির্যাতনের নেতৃত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিবকে অবিলম্বে অপসারণ এবং মিথ্যা সাজানো মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

আঁখি সীমা কাউসার বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ (উপসচিব) মহিলার বিচার জনগণের সামনে করা হোক এবং তার সব অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে সেই সম্পদ গরিব গৃহহীনদের উন্নয়নে ব্যবহার করার দাবি করছি।

পর্তুগালের থেকে ফরিদ আহমেদ পাটওয়ারী বলেন, যেখানে আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করেছি, সেই বছর একজন সিনিয়র সাংবাদিকদের ওপর এই আচরণ আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর, আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রইল। বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, কেন কোনো ঘটনার‌ই এখনও বিচার হয়নি। সাগর-রুনি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তাইতো তারা এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করতে এত সাহস পাচ্ছে। সবসময় বলি বিচার চাই।

স্পেন থেকে কবির আল মাহমুদ বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সংবাদমাধ্যম কর্মীদের নির্যাতিত হওয়ার এমন ঘটনা নতুন নয়। কাগজে কলমে সংবাদমাধ্যমকে খবর প্রচারে স্বাধীনতা দেওয়া হলেও তা এমন ঘটনার মাধ্যমে পরিষ্কার হয় গণমাধ্যম এখনও স্বাধীন নয়। সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা, সমাজের ভালো দিকগুলো যেমন এই সংবাদমাধ্যমের হাত ধরে উঠে আসে ঠিক তেমনি সমাজের দোষ-ত্রুটিগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরার দায়িত্ব একজন সংবাদমাধ্যম কর্মীর পেশাগত দায়িত্ব। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম হয়রানির শিকার হওয়ার মতো ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুণ্ণ হয়েছে ঠিক তেমনি প্রশাসনের কার্যব্যবস্থাকে জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। আমি ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এর বিচার দাবি করছি।

রোম থেকে লিটন চৌধুরী বলেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধা দেওয়া মানে অনিয়ম করার সুযোগ করে দেওয়া। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করছি।

জেডএস