ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কি থেকে ১৫ মিনিটের বোটযাত্রায় বাল্টিক সাগরের বুকে অবস্থিত একটি অনন্য দুর্গ সৌমেনলিন্না। এটি হেলসিঙ্কির একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে পরিচিত এই দুর্গ। যেখানে ইতিহাস, যুদ্ধ ও স্থাপত্য সব একসঙ্গে মিলেমিশে আছে।

১৭৪৮ সালে সুইডেনের সামরিক প্রকৌশলী অগাস্টিন এহরেনসভার্ড এই দুর্গের নির্মাণ শুরু করেন। দুর্গজুড়ে রয়েছে শতাধিক প্রাচীন কামান, যেগুলো একসময় রাশিয়া ও সুইডেনের শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ ঠেকাতে ব্যবহার করা হতো। পাথরের টানেল, গোলাবারুদ রাখার ঘর আর প্রাচীরের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনে হয় যেন কয়েকশ বছর আগের যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে যাওয়া।

দুর্গের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে নির্মাতা অগাস্টিন এহরেনসভার্ডের সমাধি। ব্রোঞ্জ ও গ্রানাইটের এই স্মৃতিস্তম্ভ যুদ্ধের ট্রফি থেকে সংগৃহীত ধাতু দিয়ে তৈরি সৌমেনলিন্নার এক বিশেষ প্রতীক।

সৌমেনলিন্না কেবল ইতিহাস নয়, এটি এখন একটি জীবন্ত দ্বীপ। এখানে রয়েছে ক্যাফে, রেস্তোরাঁ, আর্ট গ্যালারি ও জাদুঘর। গ্রীষ্মের সময় মানুষ আসে রোদ পোহাতে, শীতে বরফের চাদরে ঢেকে যায় এই ঐতিহাসিক ভূমি। পর্যটকরা এখানে খুঁজে পান শান্তি, ইতিহাস আর প্রকৃতির অপরূপ সমাহার। কেউ বলেন এটি যেন সময়ের ভেতর দিয়ে হাঁটার মতো, আবার কেউ খুঁজে পান নীরবতার প্রশান্তি।

সৌমেনলিন্না শুধু একটি দুর্গ নয়– এটি ফিনল্যান্ডের অতীতের প্রতিচ্ছবি, বাল্টিক সাগরের ইতিহাসের রক্ষক, আর পর্যটকদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য।

আব্দুল্লাহ ইকবাল/বিআরইউ