দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার-এর ওপর সাম্প্রতিক হামলা এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সাংবাদিক ও নাগরিকেরা।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) পূর্ব লন্ডনের ঐতিহাসিক আলতাব আলী পার্কে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

যুক্তরাজ্যে কর্মরত বাংলা ভাষাভাষী সাংবাদিকদের উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে গণমাধ্যমকর্মী ছাড়াও সাংস্কৃতিক কর্মী ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা অংশ নেন। সমাবেশে বক্তারা বাংলাদেশে দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ওপর সংঘটিত ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। তারা এই ঘটনাগুলোকে নজিরবিহীন আখ্যা দিয়ে দেশের গণমাধ্যমের ইতিহাসে ‘কালো দিন’ হিসেবে অভিহিত করেন।

সমাবেশে সাবেক বিবিসি সাংবাদিক উদয় শঙ্কর দাশ বলেন, অতীতেও গণমাধ্যমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, তবে সাম্প্রতিক সহিংসতা বিপজ্জনক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজে মতভেদ থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু সংগঠিত সহিংসতার আশ্রয় নেওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।

কমনওয়েলথ জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাহাস পাশা বলেন, এসব হামলা কেবল প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি নয়, সরাসরি সাংবাদিকদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। এটি শাসনব্যবস্থার গুরুতর ব্যর্থতার প্রতিফলন উল্লেখ করে তিনি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুস সাত্তার বলেন, হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদের দমিয়ে রাখা যাবে না। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ আছেন বলে তিনি জানান।

সাংবাদিক ও লেখক বুলবুল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইউকে বাংলা গার্ডিয়ান-এর ডক্টর আনসার আহমেদ উল্লাহ, নিলুফার হাসান, উর্মী মাজহার, মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, মুক্তিযোদ্ধা লুকমান হোসেন, কবি-সাংবাদিক হামিদ মোহাম্মদ, সারওয়ার ই আলম, এ এস এম মাসুম, রূপী আমিন, প্রথম আলো ইউকে প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম ও এস এম তানভীর আহমেদ।

অংশগ্রহণকারীরা বলেন, লন্ডনের এই প্রতিবাদ সভা বাংলাদেশের সাংবাদিকদের প্রতি সংহতি প্রকাশের পাশাপাশি গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে স্বাধীন গণমাধ্যম রক্ষার একটি জোরালো আহ্বান।

বিআরইউ