বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে কানাডায় অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কানাডা সংসদের বিশেষ আয়োজন ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ সমাপনী পর্ব শেষ হয়েছে। চার পর্বের অনুষ্ঠানটি শনিবার (৩১ জুলাই) স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় শেষ হয়।

সংগঠনের সভাপতি সুভাষ দাশের সভাপতিত্বে সভার সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মিনারা বেগম। এবারের অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযোদ্ধা আজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আনোয়ারুল হক ও মুক্তিযোদ্ধা আকবর কবির।

সঙ্গীত পরিবেশন করেন ড. মমতাজ মমতা, অরুনাভ ভট্টাচার্য্য ও জয় দাশ। আবৃত্তিতে ছিলেন হোসনে আরা জেমী ও বিথীকা বসাক। চার পর্বের এই মিলনমেলায় কানাডায় অবস্থানরত ১৯ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। তাছাড়াও উত্তর আমেরিকার বেশ কয়েকজন শিল্পী সংযুক্ত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বের সঞ্চালনায় ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর হায়াত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সহ-সভাপতি স্বপন বিশ্বাস। আলোচনায় মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালে মহান যুদ্ধে অংশগ্রহণের সময় রনাঙ্গনের নানা স্মৃতি নিয়ে কথা বলেছেন। তুলে ধরেছেন স্থানীয় জনগণের বিশেষ করে নারীদের সহযোগিতার কথা ও মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অবদানের কথা।

বক্তারা বলেন, দেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম থেকে আজ অবদি সকল প্রতিকূল সময়ে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী প্রতিবাদে লড়াইয়ে সোচ্চার। যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। যে লক্ষ্যে এই দেশ স্বাধীন হয়েছিল তা এখনো অধরা। একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে সংবিধানের চারটি রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পুনর্বহাল করা অপরিহার্য্য।

উদীচী কানাডার সাধারণ সম্পাদক মিনারা বেগম বলেন, স্বাধীনতার শত্রু মৌলবাদীদের প্রতিহত করতে সংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। আমাদের আছে মানবতাবাদী একটি সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও ভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতি উদার দৃষ্টিভঙ্গি।

তিনি আরও বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, মানবিক মূল্যবোধ ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন মানুষ গড়ে উঠবে আমাদের শক্তিশালী লোকায়ত সংস্কৃতির মাঝে। বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের ঐতিহ্যকে। এই আন্দোলনে নুতন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে নিরলসভাবে এগিয়ে যেতে হবে।

সংগঠনের সভাপতি সুভাষ দাশ উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ‘উদীচী এমনই এক আয়না’ গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন।

ওএফ