অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রতিটি দেশের টিকা সংক্রান্ত তথ্য পর্যবেক্ষণ করছে। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  তাদের প্রকাশিত ‘আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা’র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জনসংখ্যার বিবেচনায় শতাংশ হিসেবে টিকা দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। আর পর্তুগালের ৮৭ শতাংশেরও বেশি নাগরিক কমপক্ষে একটি ডোজ এবং প্রায় ৮২ শতাংশ নাগরিক পূর্ণ ডোজ করোনা টিকা গ্রহণ করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

পর্তুগালের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্তা টেমিদো শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বন্দরনগরী পোর্তোতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোভিড-১৯ গণটিকা কার্যক্রমের জন্য আমরা যেসব টিকাকেন্দ্র স্থাপন করেছিলাম, তার মধ্যে কিছু টিকাকেন্দ্র বন্ধ করতে কোনো অসুবিধা নেই। পরে যদি বিশ্বের সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পুনরায় টিকা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে তবে প্রয়োজনে আমরা ছোট পরিসরে সম্পন্ন করতে পারব।

অপরদিকে দেশটিতে প্রায় ১০ শতাংশ নাগরিক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাদেরও পর্যায়ক্রমে টিকা দেওয়া হচ্ছে। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছয় মাস পর টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকার কারণে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অনেকে টিকাগ্রহণ করতে পারেননি। তবে গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হওয়ায় দিন থেকে ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পর তিন মাস অন্তর টিকা গ্রহণ করতে পারবে বলে পরামর্শ দিয়েছে।

তাছাড়া যেহেতু করোনামুক্ত ব্যক্তিদের টিকার একটি করে ডোজ দেওয়া হবে, সে কারণে শিগগিরই একটি বড় অংশ পূর্ণ ডোজ টিকা গ্রহণকারীর তালিকায় যুক্ত হবেন। তাই ভ্রাম্যমাণ এ বড় টিকা কেন্দ্রগুলো বন্ধ করতে করতে সরকারের কোনো সমস্যা নেই। এছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পুনরায় যদি দেশের জনগণকে টিকা দিতে হয় আমাদের সেই সক্ষমতা রয়েছে এবং প্রয়োজনে তৃতীয় ডোজ দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে টিকা গ্রহণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে। সেদিক থেকে পর্তুগালের অবস্থা একটু ভিন্ন। যদিও গত মাসে করোনার টিকার টাস্ক ফোর্সের প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল হেনরিক গোইভিয়া ই মেলো রাজধানী সংলগ্ন একটি শহরে যুবকদের টিকা কার্যক্রম পরিদর্শনে হামলার শিকার হয়েছিলেন। তবুও টিকাকার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়নি।

পর্তুগিজ নাগরিকরা সরকারের আহ্বানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকাকার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। বছরের শুরুতে অতিরিক্ত করোনা সংক্রমণ ও টিকা সরবরাহে ধীরগতির কারণে টিকাদান কার্যক্রম কিছুটা বিলম্বিত হলেও এখন সরকারের উচ্চপর্যায়ের সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন। এ বিষয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর টাস্কফোর্স প্রধান বলেন, আমরা মহামারির প্রথম যুদ্ধে জয়ী হয়েছি, যদিও তা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি।

অক্সফোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৪২ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ কমপক্ষে একটি ডোজ করোনা টিকাগ্রহণ করেছেন। তবে এদের বেশিরভাগই উন্নত দেশে। স্বল্পআয়ের দেশগুলো মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ একটি করে ডোজ গ্রহণ করতে পেরেছেন। এ পর্যন্ত বিশ্বে ৫৮৬ কোটি ডোজ করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিদিন ২ কোটি ৯৯ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে।

এসএসএইচ