বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্যারিসে আয়োজন করা হয়েছে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব। আন্তরিকতাই গড়তে পারে সামাজিক বন্ধন- এই স্লোগান নিয়ে রোববার দুপুরে বন্ধন পরিবারের উদ্যোগে প্যারিসের একটি রেস্তোরাঁয় এই পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জিএমজি কার্গো সার্ভিস-ফ্রান্সের চেয়ারম্যান কবির হোসেন পাটোয়ারি।

আয়োজক সংগঠনের সুহৃদ প্রিয়াঙ্কা প্রিয়-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন জাতীয় পার্টি ফ্রান্স শাখার সাধারণ সম্পাদক হাবিব খান, বিএনপির ফ্রান্স শাখার সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহের, প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাব ফ্রান্সের সভাপতি এনায়েত হোসেন সোহেল, ইউরো বাংলা টিভির এমডি আবু তাহের, সাংবাদিক রেজাউল করিম, সমাজকর্মী রফিকুল ইসলাম জুয়েল, শরীফ আহমদ সৈকত ও আকতার হোসেন মিহির।

এছাড়া অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বন্ধন পরিবারের মো. গিয়াস, আমিন খান, জেবিন খান, সুলাইমান সরদার, শিমু আখতার, ফরহাদ হোসেন, রেখা ও সাথী ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী সাথী মজুমদার প্রমুখ।

দেশীয় আমেজে অনুষ্ঠিত উৎসবে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পিঠার পসরা বসে। পিঠা উৎসবের স্টল জুড়ে স্থান পায় জিরা পিঠা, ভাপা পুলি, নকশি, বিস্কুট পিঠা, চিতই, পাঠিসাপটা, পলি পিঠা, ডালের পিঠা ও তালের পিঠাসহ নানা রকমের পিঠা।

এছাড়া উৎসবে দেশীয় বিভিন্ন পোশাক সামগ্রীর একাধিক স্টলও ছিল। বিশেষ করে তাঁতের শাড়ি, জুট কটন, তাঁতে বুনা কটন জামদানি, থ্রি-পিস, হাতে বুনা ট্রাইডাই, নকশীকাঁথাসহ বিভিন্ন ধরনের বুটিক কালেকশনের সমাহার ছিল স্টলগুলোতে।

দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা উৎসবে ভিড় জমান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রবাসী বাঙালি। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বন্ধন পরিবারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও নারী উদ্যোক্তা শিউলি গিয়াস বলেন, পিঠা বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের জাতীয় ও নিজস্ব সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ এই পিঠাকে মননে ধারণ ও লালনের পাশাপাশি পরবাসে নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির সমুন্নত ঐতিহ্যকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রয়াস নিয়েই মূলত এই আয়োজন।

মেলায় আগত অতিথি এবং দর্শনার্থীরা বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার বাহারি পিঠা। একসময় নবান্ন ও পৌষ-পার্বনে পাড়ায়-মহল্লায় ছোট-বড় সকলেই পিঠা খাওয়ার আনন্দে মেতে উঠতাম। পরবাসের যান্ত্রিক জীবনে সেই স্বাদ নেওয়ার সুযোগ আমাদের খুবই কম। তাই এরকম ব্যতিক্রমী আয়োজন উপভোগ করতে পেরে আমরা খুবই মুগ্ধ এবং অভিভূত।

 উৎসবকে কেন্দ্র করে বিকেলে এক মনজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে জনপ্রিয় শিল্পী শিউলি গিয়াস, বরন বড়ুয়া, লুবনা, আমিন খান, রঞ্জিত বড়ুয়াসহ প্যারিসের বিভিন্ন পর্যায়ের শিল্পীবৃন্দ সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

এনএফ