সংযুক্ত আরব আমিরাতের সুবর্ণজয়ন্তী অর্থাৎ ৫০তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ বৃহস্পতিবার। ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর ব্রিটিশদের হাত থেকে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। এর উত্তরে পারস্য উপসাগর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে সৌদি আরব, এবং পূর্বে ওমান ও ওমান উপসাগর।

এ উপলক্ষে এক্সপো-২০২০-এ বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ, আমিরাতের সব জায়গায় গাড়ি পার্কিং ফ্রি, ৮৭০ জন কয়েদি মুক্তি, জাতীয় টেলিকম ইতেসালাতের ৫০ জিবি ডাটা ফ্রিসহ থাকছে আইফোন ১২, আইফোন ১৩ ও আইপডে ৮০ শতাংশ ছাড়। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশি আবুধাবি দূতাবাস ও দুবাই কনস্যুলেট বন্ধ, অনেক বিভাগে ট্রাফিক জরিমানা ছাড় দেওয়া হয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত মরুময় দেশ। স্বাধীনতা পরবর্তীতে সাবেক প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের নেতৃত্বে সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়নে দেশটির অবস্থান অনেক উপরে চলে আসে।
 
১৯৫০-এর দশকে পেট্রোলিয়াম আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাত মূলত ব্রিটিশ সরকারের অধীন কতগুলো অনুন্নত এলাকার সমষ্টি ছিল। খনিজ তেল শিল্পের বিকাশের সাথে সাথে এগুলোর দ্রুত উন্নতি ও আধুনিকায়ন ঘটে। ফলে সত্তরের দশকের শুরুতে আমিরাত ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে আসতে সক্ষম হয়। দেশের খনিজ তেলের বেশিরভাগ আবুধাবিতে পাওয়া যায়, এটি সাতটি এলাকার মধ্যে সবচেয়ে ধনী ও শক্তিশালী শহর। তেল শিল্পের কারণে এখানকার অর্থনীতি স্থিতিশীল এবং জীবনযাত্রার মানও উন্নত।

আমিরাতে রয়েছে অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন ও গগনচুম্বী ভবন। স্বাধীনতার পর খুব কম সময়ে আমিরাত বিশ্বের অন্যতম সুন্দর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই মরুভূমির বুকে বড় বড় দালান ও অট্টালিকায় স্বপ্নের রাজ্য হিসেবে গড়ে উঠে আমিরাত। বর্তমানে বিশ্বের প্রথম দশটি ধনী দেশের একটি সংযুক্ত আরব আমিরাত।

আবুধাবি, দুবাই, শারজাহ, আজমান, ফুজাইরাহ, রাস আল খাইমাহ, উম্ম আল কোয়াইন-সহ আমিরাতের প্রধান প্রধান সড়কসহ শহরের সড়কগুলোতে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি আলোকিত ফিফটি লেখা শোভা বাড়াচ্ছে আজ।

মোটর র‍্যালি, বিমান মহড়া, ড্যান্সিং ঝরনা, আলোকসজ্জা, আতশবাজি, উঁচু ভবনে রঙ বেরঙের সাজ ও আলোর ঝলকানির নজর কাড়ছে। আমিরাতকে সাজানো হয়েছে নানা রঙের ব্যানার, ফেস্টুন ও আলোর ঝলকানিতে। স্কুল কলেজ, অফিস-আদালত, সুপার ও হাইপার মার্কেট সেজেছে নানা সাজে।

দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে আরবের অধিবাসীরা আমিরাতের শেখদের ছবি ও পতাকা দিয়ে নিজেদের গাড়ি সাজিয়েছে। আমিরাতের বিভাগীয় শহরের কর্ণেস পাড়ে রাতে সেসব গাড়ির প্রদর্শনী দেখানো হয়। আনন্দ ভাগাভাগি করার লক্ষ্যে ও আরব অধিবাসীদের উৎসাহ দিতে শহরের বিভিন্ন মহাসড়কেও সে রাতে আমিরাতে বিভিন্ন দেশের প্রবাসীসহ অভিবাসী পর্যটকের ভিড় জমে।

এছাড়া বড় বড় শপিং মলগুলোতে দিবসটি উপলক্ষে উৎসবের আমেজ লক্ষণীয়। ভিন্ন তালিকায় ন্যাশনাল ডে ফ্যাশন শোসহ আরব সংস্কৃতি ঐতিহ্যের নানা আয়োজন ও পণ্যে বিশেষ ছাড় রেখেছে শপিং মলগুলো।

এদিকে আবুধাবি-শেখ খলিফা বিন যায়েদ আল-নাহিয়ান, দুবাই-শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম, শারজাহ-শেখ সুলতান বিন মোহাম্মদ আল-কাশিমি, আজমান-শেখ হুমাইদ বিন রশিদ আল-নুয়াইমি, ফুজাইরাহ-শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ বিন মোহাম্মদ আশ-শারকি, রাস আল খাইমাহ-শেখ সৌদ বিন শাকর আল-কাশিমি ও উম্ম আল কোয়াইন-শেখ সৌদ বিন রশিদ আল-মু’আল্লা ৫০তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে স্থানীয় ও আমিরাতে অবস্থানরত অভিবাসীদের অভিনন্দন ও উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এ বছর সাপ্তাহিক ছুটিসহ চার দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বেসরকারি খাতে ছুটি থাকছে তিন দিন।

এসএসএইচ