মালয়েশিয়ায় তিন মাসে লাখের বেশি পাসপোর্ট আবেদন নিষ্পত্তি
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ভবন/ ফাইল ছবি
মালয়েশিয়ায় তিন মাসে লক্ষাধিক পাসপোর্ট আবেদন নিষ্পত্তি করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। পাশাপাশি দূতাবাসের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে প্রবাসীরা পেয়েছেন তথ্যসেবা। সদ্য যোগদান করা হাইকমিশনার গোলাম সরোয়ার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে পাসপোর্ট সেবা দ্রুত ও সহজভাবে দেওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছিলেন, মূলত দ্রুত সেবা দেওয়ার মাধ্যমে তার কথা বাস্তবায়ন করা হলো।
এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হাইকমিশন উল্লেখ করেছে, গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি এ তিন মাসে প্রাপ্ত এক লাখ ১০ হাজার আবেদনের পুরোটাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে যা বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সকল দূতাবাসের যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ।
বিজ্ঞাপন
করোনা শুরু হলে মালয়েশিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলাচল ও লোক সমাগম বন্ধ থাকে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত। এ সময় হাইকমিশনের পক্ষে কোনো কাজ করা সম্ভব হয়নি, কিন্তু প্রবাসীদের পাসপোর্ট রিনিউয়ের (মেয়াদ বাড়ানো) কাজ থেমে থাকেনি। প্রবাসীদের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সীমিত আকারে পাসপোর্টের কাজ শুরু করে হাইকমিশন। কমিশনে না এসেই ডাকযোগে পাসপোর্টের আবেদন করতে থাকেন প্রবাসীরা।
এর মধ্যে মালয়েশিয়া সরকার অবৈধদের বৈধ করার রিক্যালিব্রেশন কর্মসূচি ঘোষণা করে নভেম্বরে, যা চালু থাকবে এ বছরের জুন পর্যন্ত। ফলে আগ্রহীদের পাসপোর্ট রিনিউয়ের কাজ জোরদার হয় এবং হাজার হাজার আবেদন আসতে থাকে হাইকমিশনে। যা সীমিত জনবল দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে হাইকমিশন সম্পন্ন করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, স্বাভাবিক সময় প্রতিমাসে ঢাকা থেকে ২০ জন কর্মচারী মালয়েশিয়ায় এসে পাসপোর্টের কাজে সহায়তা করতেন। তবে করোনার কারণে আসা বন্ধ আছে। ফলে হাজার হাজার আবেদনের প্রতিটা ধাপ সতর্কতার সঙ্গে নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ভলান্টিয়াররা কাজ করতে থাকেন। একইসঙ্গে নতুন পাসপোর্ট বিতরণ চলতে থাকে পাসপোর্ট অফিস থেকে। মালয়েশিয়া সরকারের দেওয়া নিয়ম কানুন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৌশল হিসেবে হাইকমিশন পাসপোর্ট বিতরণের পূর্বে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আসার পদ্ধতি চালু করে। ঘরে বসেই অনলাইনে চেক করে জানতে পারে পাসপোর্ট আবেদনের অবস্থা, এনরোলমেন্ট নং এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া। পাশাপাশি ফেসবুক পেজে সম্পন্ন কাজের তালিকা প্রচার করতে থাকে নিয়মিত।
এই কাজ করতে গিয়ে হাইকমিশনের ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং তারা সুস্থ হয়ে আবার কাজে ফিরে এসেছেন বলেও বিজ্ঞতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
পাসপোর্ট এনরোলমেন্টের পর তাদের অপেক্ষায় থাকতে হয় কবে পাসপোর্ট হাতে পাবেন এবং ভিসা লাগানোর কাজ শুরু করবেন। অনেকে বৈধ হওয়ার জন্য নাম লেখাবে। করোনার কারণে এ অপেক্ষা দীর্ঘ হলেও হাইকমিশন আশ্বস্ত করে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে, বিপুল সংখ্যক পাসপোর্ট যতদ্রুত সম্ভব ঢাকা থেকে এনে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পাসপোর্টের বিষয়ে দালালের প্ররোচনায় পড়ে প্রতারিত না হয়ে সকল প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাইকমিশনের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে যথাসময়ে পাসপোর্ট সেবা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
আহমদুল কবির/এফআর