পর্তুগালে এক স্বাস্থ্যকর্মীর দেহে প্রয়োগ করা হচ্ছে করোনার ভ্যাকসিন/ ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রয়োগের কার্যক্রম শুরু হলেও পর্তুগালে কিছুটা ধীরগতিতে চলছে এর কার্যক্রম। প্রতিদিন দেশটিতে ৫০ হাজার ভ্যাকসিন প্রয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও এখন দিনে প্রয়োগ করা হচ্ছে ১০ হাজার ভ্যাকসিন।

দেশটিতে এক মাসেরও বেশি সময় আগে এই ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালু হলেও প্রয়োগ হয়নি সেভাবে। তবে এই স্থবিরতার মূল কারণ ফাইজারের ভ্যাকসিন সরবরাহে ধীরগতি এবং নতুন ভ্যাকসিন অনুমোদনের সময়ক্ষেপণ। তবে এই পরিসংখ্যানে পর্তুগাল খুব বেশি পিছিয়ে নেই, কেননা পুরো বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন প্রয়োগে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগে জনসংখ্যার দিক থেকে পর্তুগাল সারাবিশ্বে ১৪তম অবস্থানে রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ স্পেন রয়েছে ঠিক পর্তুগালের নিচে অর্থাৎ ১৫তম অবস্থানে।

এ পর্যন্ত পর্তুগালে তিন লাখ ৫০ হাজার ৯৪৫ জনের শরীরে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। যা দেশের মোট জনসংখ্যা দুই দশমিক ৭০ শতাংশ এবং মাত্র শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশ মানুষকে দুটি করে ডোজ নেন অর্থাৎ খুবই সামান্য সংখ্যক মানুষ এই ভ্যাকসিনের পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন।

দেশের ৭০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে করোনার ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে পর্তুগাল সরকার। তা গ্রীষ্ম শেষ হওয়ার আগেই সম্পন্ন করতে চাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিদিন ১০ হাজার ৩৬২ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে তবে এটি চলতে থাকলে সরকারের এই লক্ষ্যমাত্রা পৌঁছানো সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে তারা পদক্ষেপ নিয়েছে।

যদিও শুরুতে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের টাস্কফোর্সের প্রধান ফ্রান্সিসকো রামোস বলেছিলেন, প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ হাজার ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্তা টেমিদো জানিয়েছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়স্কদের এবং ৫০ থেকে ৭৯ বছর বয়সের যাদের অন্য কোনো মরণঘাতী অসুখ রয়েছে তাদেরকেও ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এই গ্রুপের লোকের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখের মতো। পাশাপাশি যারা ইতোমধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন তাদেরকে দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করা হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনগণকে ধৈর্য ধারণ করতে বলেছেন। এছাড়া খুব শিগগিরই সরকার দৈনিক ভ্যাকসিন প্রয়োগের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে খুব দ্রুতই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সকলকে ভ্যাকসিনের কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত ২৯ জানুয়ারি তৃতীয় নিরাপদ ভ্যাকসিন হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উৎপাদিত ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়। তবে পর্তুগাল ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম অনুমোদিত ফাইজারের ভ্যাকসিন প্রদানের মাধ্যমে গত ২৭ ডিসেম্বর পর্তুগাল এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমের শুরু করে।

ফরিদ আহমেদ/এফআর