চলাফেরার পথে অনেক সময় রাস্তায় বিভিন্ন কাগজ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর মধ্যে কিছু কাগজে বাংলা বর্ণমালা ও পাঠ্য বইয়ের অংশ থাকে। আবার কোনটাতে কোরআনের আয়াত, হাদিসের অংশ, আরবি লেখাও থাকে। এমন কাগজ কুড়িয়ে পেলে তা পুড়িয়ে ফেলতে হবে নাকি কোনো নির্জন জায়গায় গর্ত খুঁড়ে পুঁতে ফেলতে হবে এ নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ তৈরি হয়।

এমন কাগজ পেলে তা পুড়িয়ে ফেলার অনুমতি রয়েছে। হজরত উসমান রা. যখন কোরআনকে একত্রিত করেছিলেন তখন তিনি পুরনো সব পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে দেন। হজরত আশরাফ আলী থানবী রহ. নিজেও কোরআনের পুরনো অংশগুলো সতর্কতার সঙ্গে পুড়িয়ে দিতেন এরপর সেগুলো মাটির পাত্রে ভরে কোনো পবিত্র জায়গায় গর্ত খুঁড়ে সেখানে পুঁতে রাখতেন। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত এমন কাগজে আরবি অক্ষরের চিহ্ন থাকবে ততক্ষণ এগুলো পোড়ানো উচিত নয় বলে ইমাম মুহাম্মদ রহ. মত দিয়েছেন।

আল্লামা সামী রহ. নিজেও লিখেছেন, কোরআন হাদিসের কোনো অংশ পুরনো হয়ে গেলে তা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন কাপড়ে মুড়ে নির্জন জায়গায় গর্ত খুঁড়ে পুঁতে ফেলতে হবে। এমন কাগজ কাপড়ে মুড়িয়ে প্রবাহিত পানিতে ফেলে দেওয়ারও অনুমতি আছে। 

যদি এমন কাগজ পোড়ানো, পুঁতে ফেলা বা প্রবাহিত পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে আলেমরা কাগজের টুকরোগুলোকে ছিঁড়ে ফেলার অনুমতি দিয়েছেন। 

মনে রাখতে হবে কোরআনের সম্মান ও মর্যাদা অনেক উর্দ্ধে। দুনিয়াতে কোরআন সবচাইতে দামী ও সম্মানী বস্তু। কোরআনের সঙ্গে যেকোনো উপায়ে সম্পৃক্ত হতে পারলে আমাদের মান-মর্যাদা ও সম্মান হবে সবার উর্দ্ধে। হাদীস শরীফে কোরআন তিলাওয়াতকে সর্বোত্তম ইবাদত আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তাই কোরআনের আয়াতের কোনো অংশের যেন অসম্মান না হয় এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

এছাড়া যারা আল্লাহর কালাম তথা কোরআনকে সম্মান করে তারা পৃথিবীর বুকে সম্মানের পাত্র হয়। যারা কোরআনকে অবজ্ঞা এবং অবহেলা করেছে, তারা নানাভাবে অসম্মানের পাত্র হয়েছেন। -আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৫

এনটি/