স্থলপথে মানুষের চলাচলের অন্যতম বাহন বাস। চলাচলের ক্ষেত্রে বাস ব্যবহারের কারণে সময়, অর্থ ও শারিরীক ক্লান্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চলাফেরার পথে অনেক সময় কেউ হয়তো বাস ভাড়া দিতে ভুলে যান, পরে কোনো সময় মনে পড়ে তিনি পরিবহনের ভাড়া আদায় করেননি। আর বর্তমানে সড়কে যেই পরিমাণ বাস চলাচল করে এবং একই নামে এক কোম্পানীর কয়েক ডজন বাস চলাচল করে, তাই চাইলেও সহজেই ওই বাসের ভাড়া আদায় করা সম্ভব হয় না।

সৎ, দায়িত্বশীল ব্যক্তি মাত্রই এতে অস্বস্তিতে ভোগবেন। কারণ বাসের ভাড়া পরিবহন কর্তুপক্ষের প্রাপ্য। এতে গরিমসি অথবা অনাদায়ে অন্যের হক নষ্ট করার মতো ভয়াবহ গুনাহ  হবে। তাই কেউ এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে এবং এক্ষেত্রে সঠিক ইসলামী বিধান জানা না থাকলে তার অস্বস্তিতে ভোগাই স্বাভাবিক। 

যথাসম্ভব নির্দিষ্ট বাসটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করা। শত চেষ্টা করেও যদি না পাওয়া যায় তবে ওই টাকা বাস কর্তৃপক্ষের মূল মালিকের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এটাও সম্ভব না হলে কোনো গরীব অথবা মিসকিন দেখে সদকা করে দিতে হবে।

 

এক্ষেত্রে ইসলামী বিধান হলো-

যথাসম্ভব নির্দিষ্ট বাসটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করা। শত চেষ্টা করেও যদি না পাওয়া যায় তবে ওই টাকা বাস কর্তৃপক্ষের মূল মালিকের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এটাও সম্ভব না হলে কোনো গরীব অথবা মিসকিন দেখে সদকা করে দিতে হবে।

তবে চলাফেরার পথে যদি পরে কখনো কোনো মাধ্যমে নির্দিষ্ট ওই বাসটি খুঁজে পাওয়া যায়, তখন কর্তৃপক্ষের কাছে সদকার বিষয়টি জানাতে হবে এবং সদকার বিষয়ে তাদের সম্মতি/অনুমতি নিতে হবে, বা তার থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। কর্তৃপক্ষ সদকার বিষয়ে অনুমতি না দিলে বা ক্ষমা না করলে তার প্রাপ্য তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

ইচ্ছাকৃতভাবে এমন করা কখনো এমন করা যাবে না। কারণ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকের কাছে পেশ করো না।  (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-১৮৮)

 

এছাড়াও করণীয় হলো-

১. এমন কাজের জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে তওবা করা

২. আগামীতে এসব না করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও সচেতন হওয়া৷

তবে ইচ্ছাকৃতভাবে কখনো এমন করা যাবে না। কারণ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকের কাছে পেশ করো না।  (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-১৮৮)

কোরআনে আরো বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন,  তোমরা আমানতকে তার মালিকের  কাছে প্রত্যার্পণ করো বা ফেরত দাও।  (সূরা আন-নিসা, আয়াত-৫৮)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার কাছে তার ভাইয়ের হক রয়েছে, তা মান-সম্মানের হোক বা অন্য কিছুর হোক, সে যেন আজই ক্ষমা চেয়ে নেয় (বা পরিশোধ করে মিটমাট করে নেয়)। এমন দিন আসার আগেই, যেদিন কোনো অর্থকড়ি থাকবে না। যদি ব্যক্তির কোনো নেক আমল থাকে তা দিয়ে পাওনাদারের ঋণ বা হক শোধ করা হবে। আর যদি কোনো নেক আমল না থাকে তা হলে পাওনাদারের বা হকদারের পাপের বোঝা সমপরিমাণ তার মাথায় দিয়ে দেয়া হবে।’ -সহীহ বুখারী

কারণ, সেখানে লেনদেন অর্থ-সম্পদের বিনিময় করার সুযোগ থাকবে না বলে নেক আমল দিয়ে তা পরিশোধ করতে হবে। আর আখেরাতে নেক আমলের চেয়ে প্রয়োজনীয় আর কিছুই হবে না। সুতরাং দুনিয়াতে অর্থ-সম্পদে বা সম্মানের হক ফেরত না পেলেও আখেরাতে হক আত্মসাৎকারীর কাছ থেকে নেক আমল ছিনিয়ে নিয়ে নিজের আমলের পাল্লা ভারী করার সুযোগ কেউ হাতছাড়া করবে না। -(ফাতওয়ায়ে শামী: ৪/২৮৭-২৮৯, আল বাহরুর রায়েক: ৫/১৫২, হেদায়া: ৪/৩৩৯)

এনটি/