প্রতীকী ছবি

‘অজু’ আরবি শব্দ। এর অর্থ পরিচ্ছন্ন, সুন্দর ও স্বচ্ছ। পারিভাষিক অর্থে বিশেষ নিয়মে বিভিন্ন অঙ্গ ধৌত করাকে অজু বলা হয়। অজু নামাজের অপরিহার্য শর্ত।

অনেক ইবাদতের জন্য অজু করতে হয়। অজুর বিধান সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘হে মুমিনরা! যখন তোমরা নামাজের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমাদের মুখ ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে। এবং মাথা মাসেহ করবে আর পা টাখনু (গ্রন্থি) পর্যন্ত ধৌত করবে...। ’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৬)

নুআইম মুজমির (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রা (রা.)-এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। অতঃপর তিনি অজু করে বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন আমার উম্মতকে এমন অবস্থায় ডাকা হবে যে অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে।’ -(বুখারি, হাদিস : ১৩৬)

সব সময় অজু অবস্থায় থাকার ফজিলত ও মর্যাদা অনেক বেশি।  আল্লাহ তায়ালা পবিত্র অবস্থায় থাকা ব্যক্তিদের ভালোবাসেন। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তওবাকারী এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)

অজুতে ফরজ বিষয় চারটি, ১) মুখমণ্ডল পরিষ্কার করা। ২) কনুইসহ দুই হাতের কব্জি পরিষ্কার করা। ৩) মাথা মসেহ করা। ৪) টাখনুসহ পা পরিষ্কার করা। এই অঙ্গগুলো ধোয়ার ক্ষেত্রে ধীরস্থীরতা ও ধারাবাহিকতা রক্ষা করা উচিত। এবং প্রতিটি অঙ্গ ধোয়ার জন্য যেই সুন্নত পদ্ধতী রয়েছে তা অনুসরণ করা উচিত। 

অজুর প্রতিটি অঙ্গ ধোয়ার মতো মাথা মাসেহেরও সুন্নত পদ্ধতী রয়েছে। এ বিষয়ে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

ثُمّ مَسَحَ رَأْسَهُ بِيَدَيْهِ، فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ، بَدَأَ بِمُقَدّمِ رَأْسِهِ حَتّى ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ، ثُمّ رَدّهُمَا إِلَى المَكَانِ الّذِي بَدَأَ مِنْهُ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই হাত দ্বারা মাথা মাসেহ করলেন- উভয় হাত সামনে থেকে পেছনে এবং পেছন থেকে সামনে টেনে নিলেন, মাথার অগ্রভাগ থেকে মাসাহ শুরু করলেন এবং উভয় হাত ঘাড় পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেলেন। অতঃপর উভয় হাত পুনরায় পেছন থেকে মাথার অগ্রভাগ পর্যন্ত টেনে নিলেন। (সহীহ বুখারী, বর্ণনা ১৮৫)

-ফাতহুল কাদীর ১/১৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪০; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৬৬; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭; রদ্দুল মুহতার ১/১২১; আসসিআয়া ১/১৩২

এনটি