পবিত্র মসজিদুল হারামে আজান। ছবি : সংগৃহীত

আজান পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রুতিমধুর ধ্বনি। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে— এটি কোটি মানুষের প্রাণের অনুধাবন। ইসলাম আজানের সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। আজান শোনা ও আজানের জবাব দেওয়া স্বতন্ত্র্য ইবাদতও বটে।

আজান শোনে মৌখিকভাবে উত্তর দেওয়া সুন্নত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন তোমরা আজান শুনবে, তখন জবাবে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ তোমরাও বলবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১১)

আজানের জবাব দেওয়ার নিয়ম
মুয়াজ্জিন প্রত্যেকটি বাক্য বলে থামার পর শ্রোতা ওই বাক্যটি নিজেও অনুরূপভাবে বলবে। এটা হলো- আজানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি। কিন্তু মুয়াজ্জিন ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ এবং ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময় শ্রোতা এটির পরিবর্তে ‘লা হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলবে। এটাই ফিকাহবিদদের বিশুদ্ধ অভিমত। (মুসলিম, হাদিস : ৩৮৫)

তবে কোনো কোনো বর্ণনায় ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময় শ্রোতাও অনুরূপ বলতে পারবে বলে উল্লেখ রয়েছে। (কিতাবুদ দোয়া, তাবারানি, হাদিস : ৪৫৮)

যারা জবাব দেবেন না
নামাজরত, পানাহারে মগ্ন, মলমূত্র ত্যাগকারী ও স্ত্রীর সঙ্গে শারিরিক সম্পর্কে লিপ্ত ব্যক্তি আজানের জবাব দেবে না। ঋতুকালীন সময়ে নারীরাও আজানের উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকবে।

অনেক ফিকাহবিদদের মতে আজানের পরপর যদি উল্লিখিত কাজ থেকে অবসর হওয়া যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আজানের জবাব দিয়ে দেওয়া উত্তম। কেউ কোরআন তেলাওয়াতে থাকলে সাময়িক তেলাওয়াত বন্ধ রেখে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/৩৯৭)

আজানের সময় কথা-কাজ নয়
চুপ থেকে আজান শোনা সুন্নত। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ দ্বীনি-দুনিয়াবি কথা বা কাজে লিপ্ত থাকাও অনুচিত।

সাধারণ বক্তৃতা বা সেমিনার চলাকালে আজান শুরু হলে সাময়িক তা স্থগিত রাখা চাই। ওয়াজ বা দ্বীনি মাহফিল চলাকালেও তা সাময়িক বন্ধ রেখে সবাইকে আজানের জবাব দেওয়ায় মনোনিবেশ করা উত্তম।

তবে মনে রাখা উচিত, একজন আজানের জবাব দিলে, সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায় না। কারণ, আজান শ্রবণকারী প্রত্যেক মুসলিমের জন্য উত্তর দেওয়া জন্য সুন্নত। আর আজানের উত্তর দেওয়া সুন্নতে কেফায়া নয়। (রদ্দুল মুহতার : ১/৩৯৯; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ৫/৪২৭; ফাতহুল কাদির : ১/২৪৮)