প্রতীকী ছবি

কোরবানির দিনগুলোতে সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের জন্য সালাত আদায় করুন এবং কোরবানি করুন’। (সুরা কাউসার, আয়াত, ২)

আল্লাহ তায়ালা অন্য আয়াতে বলেন— “আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেওয়া চতুস্পদ জন্তু জবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাকো এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও।” (সুরা হজ:৩৪)

কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া জরুরি। বর্ণিত হয়েছে, ‘কোরবানির গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না বরং কোরবানির মধ্য দিয়ে তোমাদের তাকওয়া-পরহেজগারী বা আল্লাহভীতিই তাঁর কাছে পৌঁছে। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন—যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ব ঘোষণা কর। এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দাও।’ (সুরা হজ, আয়াত, ৩৯)

লক্ষণীয়

দেশের মুসলিম সমাজে কোরবানিতে অন্যকে শরীক করার প্রচলন রয়েছে। এটা ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ। তবে কাউকে শরীক করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। এর একটি হলো হলো- উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ। (মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)। উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর হতে হবে। (মুআত্তা মালেক: ৭৫৪)

এছাড়াও কোরবানির পশুতে প্রত্যেকের অংশ সমান হতে হবে। কারও অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারও দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

যাদের অংশ গ্রহণে সবার কোরবানি নষ্ট হয়

>> কোরবানিতে কাউকে শরিক করার ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বিষয় হলো অংশীদার নির্বাচন করতে প্রত্যেককে ভালোভাবে জেনে-বুঝে নিতে হবে। কারণ শরিকের কারও নিয়ত গলদ হলে কারও কোরবানিই (অন্য শরিকদের কারও কুরবানি) শুদ্ধ হবে না।

এ বিষয়ে ফতোয়ার কিতাবগুলোতে বলা হয়েছে—যদি কেউ আল্লাহ তায়ালার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কোরবানি না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কোরবানি করে তাহলে তার কোরবানি সহিহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরিকদের কারো কোরবানি হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরিক নির্বাচন করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৮, কাজিখান: ৩/৩৪৯)

>> আরেকটি বিষয় হলো- হারাম টাকা দিয়ে কেউ কোরবানি করলে তার কোরবানি আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্র; শুধুমাত্র পবিত্রটাই তিনি গ্রহণ করেন...।’ (তিরমিজি: ২৯৮৯) পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ব্যয় কর তোমাদের অর্জিত হালাল সম্পদ থেকে।’ (সুরা বাকারা: ২৬৭)

এনটি