প্রতীকী ছবি

আজান ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দশন। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইসলামের অন্যতম বিধান নামাজ। আজানই মুসলমানদের নামাজের কথা মনে করিয়ে দেন। জানিয়ে দেয় মহান রবের সামনে দাঁড়িয়ে একনিষ্ঠ চিত্তে তাকে স্মরণের সময় হয়েছে। সব কাজ রেখে মসজিদ পানে চলার আহ্বান আজান। 

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরতের পর আজানের প্রচলন হয়। আজানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রহ.) আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান আনসারী মাযিনী (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাকে বললেন, আমি দেখছি তুমি বকরি চরানো এবং বন-জঙ্গলকে ভালোবাস। তাই তুমি যখন বকরি চরাতে থাকো বা বন-জঙ্গলে থাকো তখন উচ্চকন্ঠে আজান দাও। কেননা, জিন, ইনসান বা যেকোনো বস্তুই যতদূর পর্যন্ত মুয়াজ্জিনের আওয়াজ শুনবে, সে কিয়ামতের দিন তার পক্ষে স্বাক্ষ্য দিবে। আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, একথা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে শুনেছি। -(বুখারি, হাদিস, ৫৮২)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ মেনে ইসলামের প্রথম যুগে আজান দিয়েছেন এমন মুয়াজ্জিন সাহাবি ছিলেন চারজন। তারা হলেন, হজরত বিলাল বিন রিবাহ। হজরত আম্মার ইবনে ইয়াসিরের গোলাম সা’আদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। হজরত আবু মাহজুরা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। আরেকজন ছিলেন অন্ধ সাহাবি হজরত আমর বিন উম্মে মাকতুম কুরশী আমেরি।

এর মাধ্যমে বুঝা যায়, অন্ধ ব্যক্তি আজান দিতে পারবে। এতে কোনো কোনো সমস্যা নেই। হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنِ ابْنِ الْمُسَيِّبِ، ‌أَنَّ ‌ابْنَ ‌أُمِّ ‌مَكْتُومٍ، ‌كَانَ  ‌يُؤَذِّنُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، وَهُوَ أَعْمَى فَكَانَ لَا يُؤَذِّنُ حَتَّى يُقَالَ لَهُ: أَصْبَحْتَ

‘সাইদ ইবনে মুসাইয়্যিব (রহ.) বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াাসাল্লামের জন্য আজান দিতেন। আর তিনি ছিলেন অন্ধ। তাকে যখন বলা হতো সকাল হয়েছে তখন তিনি আজান দিতেন।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস, ১৮১৯)

তবে দৃষ্টিশাক্তি ভালো এমন কোনো ব্যক্তি উপস্থিত থাকলে উত্তম হল অন্ধ ব্যক্তি আজান না দেওয়া। কারণ হাদিস শরিফে এসেছে, ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলতেন,

مَا ‌أُحِبُّ ‌أَنْ ‌يَكُونَ، ‌مُؤَذِّنُوكُمْ ‌عُمْيَانَكُمْ

‘তোমাদের মুয়াজ্জিনন অন্ধ হবে আমি এটা পছন্দ করি না।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস, ১৮১৮)

এনটি